প্রায় ১০ দিন পর সিলেটে বৃষ্টি থেমেছে। নগরের পানিও কিছুটা কমেছে।
আকাশ মেঘলা থাকলেও রোববার সকাল থেকে বৃষ্টি হয়নি। এতে অনেকেই আশা করছেন, হয়তো দ্রুত কাটতে শুরু করবে ভয়াবহ এই দুর্যোগ।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, সুরমা নদীর পানি সিলেট পয়েন্টে কিছুটা কমেছে, তবে বেড়েছে কানাইঘাটে। অন্য নদীগুলোর পানি বৃদ্ধিও অব্যাহত আছে।
বন্যাদুর্গত এলাকা পরিদর্শনে রোববার দুপুরে সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম সফিউদ্দিন আহমেদের সিলেটে আসার কথা জানিয়েছে আইএসপিআর। এক বিবৃতির মাধ্যমে তারা বিষয়টি জানায়।
স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ এই বন্যায় সিলেট ও সুনামগঞ্জের প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকা তলিয়ে গেছে।
বিভাগীয় কমিশনার মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন জানান, দুই জেলায় এখন প্রায় ৪০ লাখ মানুষ পানিবন্দি।
তিনি বলেন, ‘বন্যার পাশাপাশি বিদ্যুৎহীনতা ও মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় মানুষের ভোগান্তি আরও বেড়েছে। উদ্ধার কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে। প্রশাসন বানভাসি মানুষের সহায়তায় সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
‘দুই জেলার বেশির ভাগ প্রধান সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় এবং মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় বিপদে পড়া মানুষের সঠিক তথ্য মিলছে না। প্রশাসন, গণমাধ্যম সবাইকেই তথ্য পেতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’
পানিবন্দি মানুষের সহায়তায় শুক্রবার থেকে সিলেটে এবং শনিবার থেকে সুনামগঞ্জে কাজ শুরু করেছে সেনাবাহিনী। শনিবার থেকে তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে নৌবাহিনীও।
সেনাবাহিনীর এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল হামিদুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সেনাবাহিনীর ১৭টি ব্যাটালিয়ন বিভিন্ন উপদলে বিভক্ত হয়ে সিলেট ও সুনামগঞ্জে উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে। একটি প্যারা কমান্ড দলও এই কাজে যুক্ত হয়েছে।’
সিলেটে গত বুধবার বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বৃহস্পতিবার তা ভয়াবহ রূপ নেয়। এদিন বিকেল থেকে দ্রুত বাড়তে শুরু করে পানি। তলিয়ে যায় সিলেট নগরের বেশির ভাগ এলাকা।
বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জেলার কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট উপজেলা। সড়কসহ এই দুই উপজেলার প্রায় পুরোটাই পানিতে তলিয়ে গেছে। সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কও পানির নিচে।
বন্যার পানির কারণে শুক্রবার বিকেলে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সব ধরনের বিমান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়। শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে সিলেট রেলস্টেশনও বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এতে সারা দেশের সঙ্গে আকাশ ও রেলপথে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সিলেট।