বান্দরবানে টানা তিন দিনের ভারি বর্ষণের কারণে দেখা দিয়েছে পাহাড়ধস ও বন্যার আশঙ্কা। তাই পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে জেলার বিভিন্ন স্থানে করা হচ্ছে মাইকিং।
প্রতিটি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
বান্দরবান পৌরসভার পক্ষ থেকে জরুরি বিজ্ঞপ্তি জারি করে শনিবার দুপুর থেকে এই মাইকিং শুরু হয়।
জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরিজি বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে বান্দরবান আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়া সহকারী (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) সনাতন কুমার মণ্ডল বলেন, ‘শনিবার সকাল থেকে রোববার সকাল ৯টা পর্যন্ত ৮৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এই বৃষ্টিপাত আগামী ২২ জুন পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বান্দরবানে থেমে থেমে ভারি বৃষ্টি হয়েছে।’
টানা বৃষ্টিপাতের কারণে সাঙ্গু নদীর পানি বেড়েছে। এতে শহরের আর্মিপাড়া, ইসলামপুর ওয়াবদা ব্রিজ, মেম্বারপাড়া,সুইচ গেট, (বরিশালপাড়া), শেরেবাংলা নগরসহ বেশ কয়েকটি এলাকা ভারি বর্ষণে তলিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে অধিদপ্তরটি।
শহরের কালাঘাটা,বালাঘাটা লাঙ্গিপাড়াসহ সাত উপজেলায় পাহাড়ধসের ঝুঁকিতে বসবাস করছে প্রায় তিন হাজার মানুষ। ঝুঁকিপূর্ণ এই বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া না হলে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে ইতোমধ্যে সাত উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরিজি বলেন, ‘পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে যারা বসবাস করছেন, তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এরপরও যারা সরবে না তাদের মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সরিয়ে দেয়া হবে। প্রত্যেক উপজেলায় ইউএনওদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখতে।’
প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড়ধসে প্রাণ হারায় পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারী বাসিন্দারা।
জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, জেলার ৭ উপজেলায় প্রায় দুই হাজার ৫০০ জন ঝুঁকিপূর্ণভাবে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করছে। ২০১৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত জেলায় পাহাড়ধসে প্রাণ গেছে ৬৭ জনের।