উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার অর্থনৈতিক কূটনীতির ওপর বিশেষভাবে জোর দিচ্ছে। ভারতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এমনটি জানিয়েছেন।
কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রির (সিআইআই) সহযোগিতায় নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন আয়োজিত ‘অর্থনৈতিক কূটনীতি’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিশ্বব্যাপী চলমান অর্থনৈতিক অস্থিরতা এবং ইউরোপের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক উন্নয়নের প্রসঙ্গ এনে মোমেন বলেন, কূটনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে অর্থনৈতিক কূটনীতির ওপর জোর দিতে হবে।
ড. মোমেন সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত সরকার গত একদশকে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে এবং প্রতিবেশী দুই দেশের জনগণের সার্বিক উন্নয়নের জন্য একে অপরের প্রয়োজনীয়তা পূরণের ওপর জোর দিয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, কয়েক বছর ধরে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং করোনা মহামারির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে গত বছর ১৬ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক ছাড়িয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, প্রস্তাবিত সিইপিএ ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে দুই দেশের জন্যই একটি জয়-জয়কার পরিস্থিতির সূচনা করবে।
কেবল ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের জন্য তৈরি বাংলাদেশের মোংলা ও মিরসরাই নামের দুটি বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করার জন্য দেশটির ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান সফররত মন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বে একসময়ের তলাবিহীন ঝুড়ি হিসেবে পরিচিত এই বাংলাদেশ সব প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে বিশ্বে ৪১তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে পরিণত হয়েছে। ২০৩৫ সালে বাংলাদেশের অবস্থান হবে বিশ্বে ২৫তম।’
সেমিনারে বাংলাদেশ ও ভারতের হাইকমিশনার এবং সিআইআইয়ের প্রেসিডেন্টও বক্তব্য দেন।
আজ রোববার অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বাংলাদেশ ও ভারতের দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর যৌথ সভাপতিত্বে সপ্তম জেসিসি বৈঠকে যোগ দিতে শনিবার বিকেলে নয়াদিল্লি পৌঁছেছেন ড. মোমেন।
ড. মোমেন নয়াদিল্লিতে বসবাসকারী বাসিন্দা ও বাংলাদেশে রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন এবং সফরের সময় ভারত সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
এর আগে গত ২৭ মে দিল্লিতে অনুষ্ঠেয় ভারত-বাংলাদেশ যৌথ কনসালটেটিভ কমিশনের (জেসিসি) বৈঠক স্থগিত করা হয়।
আসামের রাজধানী গোয়াহাটিতে শনিবার ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের পার্শ্ববৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। জেসিসির বৈঠকটি হওয়ার কথা ছিল সোমবার।