নওগাঁর বদলগাছি উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদ রানার বিরুদ্ধে একই ইউনিয়নে এক নারী উদ্যোক্তাকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় ওই নারী জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের অনুলিপি স্থানীয় সরকার বিভাগের উপরিচালক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরও দিয়েছেন।
যা বলা হয়েছে অভিযোগে
চেয়ারম্যান মাসুদ রানা গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আগে থেকে ওই নারী উদ্যোক্তাকে বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানি করে আসছেন। তিনি মুঠোফোনে এবং বেশ কিছু চিঠির মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দিতেন। যার প্রমাণ আছে।
ওই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন কেড়ে নেন এবং কিছু গোপন তথ্য ডিলিট করে দেন। পরে লোকের মাধ্যমে মোবাইল ফোনটি তিনি ফেরত দেন।
অভিযোগে ওই নারী বলেন, ‘কিছুদিন আগে গণটিকা চলাকালে আমার কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদা হিসেবে দাবি করেন। আমি সেই চাঁদার টাকা দিতে না পারায় তিনি আমার সব কাজে বাধা সৃষ্টি করেন এবং ডিজিটাল সেন্টারের সব সেবা সচিব এবং হিসাব সহকারীকে প্রদানের জন্য নির্দেশ দেন।
‘আমি একজন বিবাহিত নারী এবং আমার দুটি যমজ কন্যাসন্তান আছে। বর্তমানে চেয়ারম্যানের এমন প্রস্তাবের ফলে আমার কর্মক্ষেত্রে যেমন অসুবিধা হচ্ছে ঠিক একইভাবে সাংসারিক কলহের সৃষ্টি হয়েছে, যার ফলে আমার বিবাহ বিচ্ছেদও ঘটেছে।
‘এমন অবস্থায় আমার ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে কাজ এবং সামাজিক চলাচলে বাধার সৃষ্টি হয়েছে, যার পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন ওই নারী।
ওই নারী উদ্যোক্তা বলেন, ‘আমি জেলা প্রশাসক, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছি গত ১৩ তারিখে। এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। হয়তো তদন্তকাজ চলছে। আমি আশা করছি আমার অভিযোগের সঠিক বিচার পাব।
‘আমি যেভাবে হয়রানির শিকার হয়েছি, এমনটা যেন আর কারও সঙ্গে না ঘটে সেই কামনা করছি। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।’
কী বলছেন চেয়ারম্যান
মথুরাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদ রানা মুঠোফোনে বলেন, ‘মোবাইলে এসব কথা বলা যাবে না। আমি সাক্ষাতে সরাসরি কথা বলতে চাই। তবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই আমার সঙ্গে মনোমালিন্য আছে।’
কী নিয়ে মনোমালিন্য এ বিষয়ে উত্তর না দিয়ে ফোনের সংযোগ কেটে দেন তিনি।
জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসান বলেন, ‘বদলগাছি উপজেলার মথুরাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ রানার বিরুদ্ধে একই ইউনিয়নে কর্মরত এক নারী উদ্যোক্তাকে যৌন হয়রানির অভিযোগ পেয়েছি। দ্রুত তদন্তসাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’