যুক্তরাজ্যের নাগরিক কিশোরী মেয়েকে বিয়ে দিতে চান মা। কিন্তু মেয়ে বিয়েতে রাজি নয়। উপায়ান্তর না পেয়ে সিলেটের ওসমানীনগরের ১৫ বছরের এই কিশোরী হাইকোর্টের শরণাপন্ন হয়েছে। তার বয়ান শুনে লিখিত আবেদন দিতে বলেছে হাইকোর্ট।
শনিবার নিউজবাংলাকে বিষয়টি জানিয়েছেন ওই কিশোরীর আইনজীবী পূর্ণিমা জাহান।
তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার মাননীয় বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি সাহেদ নূর উদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চে মৌখিকভাবে বিষয়টি তুলে ধরলে আদালত যথাযথভাবে লিখিত আবেদন নিয়ে যেতে বলেছেন। রোববার লিখিত আবেদন করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
তার আগে ওই কিশোরীকে আশ্রয় দেয়া সমাজ সেবিকা শারমিন আক্তারসহ তার পরিবারের ৭ জনকে আগাম জামিন দিয়েছে আদালত।
ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে আইনজীবী পূর্ণিমা জাহান বলেন, ‘কিশোরীর বয়স ১৫ বছর। তার মা এখনই মেয়েকে বিয়ে দিতে চাচ্ছেন। কিন্তু কিশোরী তার মায়ের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করায় শুরু হয় দ্বন্দ্ব। বিয়ের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করায় মা তার মেয়েকে অনেক মারধর করেন। এ অবস্থায় নিজ বাসা থেকে পালিয়ে গিয়ে মেয়েটি তার এক বান্ধবীর বাসায় আশ্রয় নেয়।’
পূর্ণিমা জাহান বলেন, ‘মেয়েটির বান্ধবীর মা শারমিন আক্তার একজন সমাজ সেবিকা। তিনি কিশোরীকে আশ্রয় দেন এবং আইনজীবী নিয়োগ দেন। পাশাপাশি বাংলাদেশে ব্রিটিশ হাইকমিশনের সঙ্গে যোগাযোগসহ নানামুখী সহযোগিতা করেন।
‘মেয়েটির মা এসব জানতে পেরে সমাজ সেবিকা শারমিন আক্তারসহ তার পরিবারের ৭ সদস্যের বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা ঠুকে দেন। এ মামলায় আমরা হাইকোর্টে আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করি। আদালত সবাইকে আগাম জামিন দেন।’
এই আইনজীবী বলেন, আদালতের কাছে আমরা ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে বলেছি, এই কিশোরী জন্মসূত্রে যুক্তরাজ্যের নাগরিক। সে ওই দেশে চলে যেতে চায়।
‘আদালত ওই কিশোরীর কাছে জানতে চাইলে কিশোরী বলে- আমি স্বেচ্ছায় আমার বান্ধবী ও তার পরিবারের সঙ্গে আছি। আত্মরক্ষার জন্য সেখানে আশ্রয় নিয়েছি।
‘সব শুনে আদালত বলেছে, যেহেতু আজকের মামলাটা আগাম জামিনের। তাই এসব বিষয় নিয়ে আলাদা একটি আবেদন নিয়ে আসেন। তখন বিষয়টি দেখব।’
আইনজীবী পূর্ণিমা জাহান আরও বলেন, ‘মেয়েটির বয়স ১৫ বছর। সে এখনও মাইনর। তাই এখানে অনেক ব্যাপার আছে। তার কাস্টডি (দায়িত্ব) কে নেবে। ইংল্যান্ডে গিয়ে সে কার কাছে থাকবে। তার স্কুলের বিষয় আছে। ইংল্যান্ড সরকার তার সেফটি এবং সিকিউরিটির জন্য কী ধরনের ব্যবস্থা নেবে। এসব বিষয় কোর্টের নজরে আনব।’