চট্টগ্রামের আকবর শাহ থানার বরিশাল ঘোনা এলাকার ফজলুল হকের বাসা। মূল ঘরটি সেমি পাকা হলেও অর্ধেক টিনের তৈরি। এখানে স্ত্রী, দুই মেয়ে, জামাতা, তিন নাতি-নাতনিকে থাকতেন ফজলুল।
শুক্রবার রাতে লন্ডভন্ড হয়ে যায় ফজলুলের ঠিকানা। ঘরের ঠিক মাঝ বরাবর ধসে পড়ে পাহাড়। এতে চাপা পড়েন গৃহকর্তা, তার স্ত্রী রানু বেগম, দুই মেয়ে শাহীনুর আক্তার, মাইনুর আক্তার, শাহীনুরের সাত মাসের যমজ কন্যা তাকিয়া ইয়াসমিন তিন্নি ও তাসকিয়া ইসলাম তানহা।দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন শাহিনুর ও মাইনুর। কিছুটা আঘাত পান তাদের মা-বাবা। তাদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক দুই বোনকে মৃত ঘোষণা করেন।
আকবর শাহ থানার ১ নম্বর ঝিলের শেষ প্রান্তে শনিবার দুপুরে গিয়ে দেখা যায় ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে ফজলুলের ঘর। এই ঘরের কিছুটা নিচে থাকেন তার আরেক মেয়ে নার্গিস বেগম। ছোট দুই বোন হারিয়ে বিলাপ করছিলেন তিনি। প্রতিবেশী মাজেদা বেগম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঘটনার সময় শাহিনুর যমজ দুই সন্তান নিয়ে মা-বাবা ও বোনের সঙ্গে ঘরে ছিলেন। পাহাড় ধসে পড়ার পর সবার ক্ষতি হলেও দুই মেয়েকে বুকে আগলে রেখেছিলেন শাহীনুর। নিজে মরে গেলেও তাদের কোনো ক্ষতি হতে দেননি।’
ঝিলের গলিতে দাঁড়িয়ে কান্না করছিলেন শাহীনুরের স্বামী জয়নুল আবেদীন। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি ছেলেকে নিয়ে বাইরে ছিলাম। আমরা বলার কোনো ভাষা নেই। আমার তিনটা বাচ্চার মা আর নাই। আমি আর কিছু বলতে পারব না।’
আলাদা পাহাড় ধসের ঘটনায় দুই বোন ছাড়াও চট্টগ্রামে প্রাণ হারিয়েছেন দুইজন।
পাহাড়তলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাকের আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রাত ১টার দিকে ১ নম্বর ঝিলের বরিশাল ঘোনা এলাকায় পাহাড় ধস হয়। সেখান থেকে আহত পাঁচজনকে হাসপাতালে পাঠানো হলে চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
‘এরপর আমরা রাত ৩টার দিকে ফয়েস লেকের বিজয়নগর এলাকায় আরেকটি ধসের খবর পাই। সেখান থেকে ফায়ার সার্ভিস দুই ভাইয়ের মাটিচাপা মরদেহ উদ্ধার করে।’