বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

হবিগঞ্জে ৪০ গ্রাম প্লাবিত, পানিবন্দি হাজারও পরিবার

  •    
  • ১৮ জুন, ২০২২ ১৭:১২

‘পানি বৃদ্ধি ও বানভাসিদের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। উপজেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যার্তদের উদ্ধার ও খাবারের ব্যবস্থা করে দেয়া হচ্ছে।’

সিলেট-সুনামগঞ্জের পর এবার হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ ও নবীগঞ্জে বন্যা দেখা দিয়েছে।

দুই দিনের বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কালনী-কুশিয়ারাসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। প্রতিনিয়ত প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা।

এরই মধ্যে জেলার দুই উপজেলার অন্তত ৪০ গ্রামের হাজারও পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তাদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যার্তদের মধ্যে খাদ্যসহায়তা পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।

শুক্রবার ভোররাত থেকে হবিগঞ্জে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। একদিকে বৃষ্টি, অন্যদিকে পাহাড়ি ঢলের পানি প্রবেশ করায় কালনী-কুশিয়ারাসহ জেলার প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি বাড়তে থাকে।

শুক্রবার বিকেলের দিকে কুশিয়ারার পানি বেড়ে বাঁধ ডুবে হাওরে ঢুকতে থাকে পানি। সেই সঙ্গে প্লাবিত হয় নিচু এলাকাগুলো। আজমিরীগঞ্জ-পাহাড়পুর ও আজমিরীগঞ্জ-কাকাইলছেও সড়ক ডুবে যাওয়ায় দুটি ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

সারা রাত বৃষ্টির কারণে নদীর পানি আরও বাড়তে থাকে। শনিবার সকালে পাহাড়পুর-মারকুলি সড়কের নিখলির ঢালা এবং ফিরোজপুর-বদলপুর সড়কের কৈয়ারঢালায় কুশিয়ারা নদীর বাঁধ ভেঙে যায়। এতে প্রবল বেগে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে। প্লাবিত হতে থাকে একের পর এক গ্রাম।

আজমিরীগঞ্জ পৌর এলাকার আদর্শনগর, জয়নগর, শরীফনগর এলাকায় দেড় শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। এ ছাড়া নতুন বাড়ি, ফিরোজপুর, পাহাড়পুর, কাকাইলছেও ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ও মারকুলি এলাকায় বেশ কয়েকটি গ্রামে পানিবন্দি হয়ে পড়ে কয়েক শ পরিবার।

নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নোমান হোসেন বলেন, ‘ইউনিয়নের অন্তত ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় পুরো ইউনিয়ন প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে ৩০০ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়ার কাজ চলছে।

একই অবস্থা দিঘলবাগ ইউনিয়নের। সেখানেও বেশ কিছু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার কাজ করছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের লোকজন।

হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মিনহাজ আহমেদ শোভন বলেন, ‘টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুশিয়ারা-কালনী ও খোয়াই নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আজমিরীগঞ্জ ও নবীগঞ্জে বাঁধ উপচে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। এ ছাড়া আজমিরীগঞ্জে রাস্তা ভেঙে পানি ঢুকছে।

‘বৃষ্টিপাত ও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকার শঙ্কা রয়েছে। এতে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।’

আজমিরীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পানি বৃদ্ধি ও বানভাসিদের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। উপজেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যার্তদের উদ্ধার ও খাবারের ব্যবস্থা করে দেয়া হচ্ছে।’

বন্যাকবলিত মানুষের জন্য ৪০ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার প্রস্তুত করেছে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসন। এর মধ্যে পাঁচ হাজার প্যাকেট পাঠানো হয়েছে সুনামগঞ্জ জেলায়, সমপরিমাণ পাঠানো হবে সিলেটে। বাকি ৩০ হাজার প্যাকেট খাবার হবিগঞ্জে বন্যার্তদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।

হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহ জহুরুল হোসেন জানান, শনিবার বিকেলে একটি কাভার্ড ভ্যানে করে পাঁচ হাজার প্যাকেট খাবার সুনামগঞ্জে ও অন্য একটি কাভার্ড ভ্যানে সমপরিমাণ খাবার সিলেটে পাঠানো হয়েছে। প্রতিটি প্যাকেটে চিঁড়া, চিনি, মুড়ি, বিস্কুট, মোমবাতি, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, খাবার স্যালাইন ও দিয়াশলাই রয়েছে।

হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান জানান, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় নানা ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। কারও জরুরি ভিত্তিতে খাবার প্রয়োজন হলে ৩৩৩ হটলাইনে কল দিলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাবার পৌঁছে দেয়া হবে।

এ বিভাগের আরো খবর