শরীয়তপুরের বিলাশপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরের সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ শিশু লামিসা এখন অনেকটা সুস্থ বলে জানিয়েছে তার পরিবার।
দুই বছর বয়সী লামিসা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। বুধবার রাতে তার অস্ত্রোপচার হয়েছে।
লামিসার খালা রাজিয়া সুলতানা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বুধবার রাতে তার অবস্থা দেখে আমরা ভাবিনি যে আমাদের লামিসাকে ফিরে পাব। এখন সে আগের চেয়ে অনেক সুস্থ।’
হাসপাতালের চিকিৎসকের বরাতে লামিসার বাবা শফিউল ইসলাম বলেন, ‘বড়রা গুলিবিদ্ধ হলে কেমন যন্ত্রণা হয়! সে তো শিশু। তাহলে তার কী হতে পারে? তবুও লামিসাকে যে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে তাতে আশা করি সে খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে।
‘আমার মেয়ে এখন শুধু স্যালাইনের ওপর আছে। অন্য কোনো খাবার দেয়া হচ্ছে না।’
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে বুধবার ইভিএমে ভোট হয়। বিকেল ৫টার দিকে বিলাশপুর ইউপির ৮ নম্বর ওয়ার্ডের রহিম উদ্দিন মালাই মৃধা কান্দি একতা যুব সংঘ কেন্দ্রে ফল ঘোষণা করেন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা শেখ দেলোয়ার হোসেন।
তিনি বলেন, ‘সব প্রার্থীর ফল ঘোষণা করে আমরা রেজাল্টশিট বুঝিয়ে দিচ্ছিলাম। এ সময় বিজয়ী মেম্বার প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের সমর্থকরা মিছিল করতে থাকেন। পরাজিত মেম্বার প্রার্থী মতিউর রহমান সিকদারের সমর্থকরা তাদের ওপর হামলা করেন। তখন দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।
‘একপর্যায়ে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়। পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকরা কেন্দ্র ভাঙচুর করে নির্বাচন পরিচালনায় নিয়োজিতদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গুলি করে। এ সময় তিনজন গুলিবিদ্ধ হন।’
লামিসার বাবা বলেন, ‘আমি পরিবার নিয়ে পাশের গ্রামে থাকি। শুধু ভোট দেয়ার জন্য বিলাসপুরের মালাইকান্দিতে শ্বশুরবাড়ি এসেছিলাম। কে জানত আমাদের জন্য এখানে এত বড় বিপদ অপেক্ষা করছে।
‘আমরা ঘরেই ছিলাম। হঠাৎ ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ, হইচই, গোলাগুলি। এরপরই ঘরের টিন ভেদ করে আমার স্ত্রীর কোলে থাকা সন্তান ও স্ত্রী গুলিবিদ্ধ হয়। আমরা দুজনকে দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখান থেকে ঢাকা মেডিক্যালে পাঠিয়ে দেয়।’
শফিউল ইসলামের আক্ষেপ, ‘এত বড় একটি দুর্ঘটনার পরও আমাদের এলাকা থেকে কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা, সমাজসেবক ও প্রশাসনের কেউ খোঁজখবর নিতে আসেনি। যার কেউ নেই তার আল্লাহ আছে।’