নদনদীর পানি বেড়ে সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে সদরসহ জেলার প্রায় সব প্রান্তের ঘরবাড়িতে।
বন্যায় নিত্যপ্রয়োজনীয় সব ধরনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন জেলার বাসিন্দারা। শহরসহ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে সুপেয় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ৯টা থেকে জেলা শহরে বিদ্যুৎ নেই। সকাল ৯টার দিকেও আসেনি বিদ্যুৎ।
দুর্ভোগে মাত্রা যোগ করেছে মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্কহীনতা। জেলা শহরে বৃহস্পতিবার রাত ৩টা থেকে নিরবচ্ছিন্ন মোবাইল নেটওয়ার্ক পাওয়া যাচ্ছে না।
বানভাসীদের মধ্যে যারা বাড়িতে আছেন, তারা শুকনো খাবার খেয়ে কাটাচ্ছেন। অন্যদিকে যাদের বাড়িতে থাকার মতো অবস্থা নেই, তারা মরিয়া আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর দিকে যেতে।
সাহায্যের জন্য ফোন
সুনামগঞ্জ শহরের তেগুরিয়া এলাকার বাসিন্দা ও স্বেচ্ছাসেবী মোহাম্মদ আম্বর নিউজবাংলাকে জানান, বৃহস্পতিবার রাত থেকে সাহায্যের জন্য তার কাছে অনেকে ফোন করেছেন। তাদের মধ্যে কেউ খাবার চাইছেন, কেউ চাইছেন আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার নৌকা।
তিনি আরও জানান, স্বেচ্ছাসেবীদের বাইরে আত্মীয়স্বজন ও প্রশাসনের লোকজনের কাছে সাহায্য চেয়ে ফোন করেছেন অনেকে।
সেনাবাহিনী নামানোর আকুতি
সুনামগঞ্জে বানভাসীদের সাহায্যার্থে সেনাবাহিনী নামানোর আহ্বান জানিয়েছেন জেলার অনেক বাসিন্দা। তারা অনেকে ফেসবুকে এ নিয়ে পোস্টও করেছেন।
জেলার বাসিন্দা নন, এমন লোকজনও সেনাবাহিনী নামানোর আহ্বান জানান। তাদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস।
তিনি বৃহস্পতিবার রাত ১২টা ৫৯ মিনিটে ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘হে সৃষ্টিকর্তা, সিলেট-সুনামগঞ্জের মানুষদের রক্ষা করো। প্রয়োজনে সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর মাধ্যমে উদ্ধার তৎপরতা ও সাধারণ মানুষের নিরাপদ স্থানে নেয়া হোক।’
কী বলছে পানি উন্নয়ন বোর্ড
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, জেলার ৮০ শতাংশ অঞ্চল পানিতে ডুবে গেছে। শহরের প্রায় সব বাসাবাড়িতে পানি ঢুকেছে।
তিনি জানান, শুক্রবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে সুরমা পয়েন্টে বন্যার পানি বিপৎসীমার ১০৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
পাউবোর এ কর্মকর্তা জানান, বৃহস্পতিবার পানির স্তর ছিল ৮.২৪, যা শুক্রবার বেড়ে হয় ৮.৮৫।
জেলা প্লাবিত হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভারতের মেঘালয়ে আকস্মিক ভারী বর্ষণের কারণে সুনামগঞ্জ জেলা প্লাবিত হয়েছে।
বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে জানতে জেলা প্রশাসক (ডিসি) জাহাঙ্গীর হোসেনের দুটি নম্বরে কল করেও পাওয়া যায়নি।
বিদ্যুৎহীনতা নিয়ে কথা বলতে জেলা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কার্যালয়ের একজন নির্বাহী প্রকৌশলী ও দুজন উপসহকারী প্রকৌশলীকে কল করেও পাওয়া যায়নি।