২০২৩-এর নির্বাচন সামনে রেখে পদ্মা সেতুর গুরুত্ব মানুষের মধ্যে পৌঁছে দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন সংগঠনের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ।
২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের জনসভা যেন কোনো অপশক্তি নস্যাৎ করতে না পারে সেদিকে যুবলীগের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত জনসভা সফল করতে বৃহস্পতিবার যুবলীগের এক প্রস্তুতি সভায় পরশ এসব কথা বলেন।
রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে যুবলীগের উদ্যোগে দক্ষিণবঙ্গের ২২টি জেলার প্রতিনিধিদের নিয়ে ওই সভা হয়।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম। সঞ্চালনা করেন যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল।
যুবলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে সংগঠনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘২০২৩ এর নির্বাচনকে সামনে রেখে আপনাদের ভূমিকা হবে পদ্মা সেতুর গুরুত্ব মানুষের মধ্যে পৌঁছে দেয়া। এর গুরত্ব আপনারা সভা-সমাবেশে বলবেন। এভাবে পদ্মা সেতুর গুরত্ব সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।’
২৫ জুনের জনসভাকে সফল করার লক্ষ্যে যুবলীগের স্বেচ্ছাসেবক টিম, ফ্রি মেডিক্যাল টিম, শৃঙ্খলা টিম, সার্বিক মনিটরিং টিম, প্রচার টিম, আপ্যায়ন টিম গঠন এবং উদ্বোধনী অনুষ্ঠান যেন কোনো অপশক্তি নস্যাৎ করতে না পারে সে দিকে যুবলীগের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান যুবলীগ চেয়ারম্যান।
পদ্মা সেতুর অর্থনৈতিক গুরুত্ব ও ভূমিকাও তুলে ধরেন যুবলীগ চেয়ারম্যান। বলেন, ‘ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণে এই সেতু একটা মাইলফলক হিসেবে ভূমিকা রাখবে। গ্রামের মানুষকে জীবিকা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার জন্য শহরে দৌড়াতে হবে না। নিজ জেলা থেকেই শহরের সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবে। উন্নতমানের বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল, শিল্প, কল-কারখানা ও কর্মক্ষেত্র তৈরি হবে। খুব শিগগিরই স্বাভাবিকভাবে আপনার জেলার পৌরসভা মেগা শহরে রূপান্তরিত হবে।
‘এই সেতু নির্মাণের ফলে দেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ নদীবেষ্টিত ভূখণ্ড সরাসরি রাজধানীর সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে। পদ্মা সেতু যেমন দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের প্রায় ৫ কোটি মানুষের জীবনে অর্থনৈতিক সুবাতাস বয়ে আনবে, তেমনই কমপক্ষে ১ দশমিক ৫ শতাংশ জাতীয় আয় বৃদ্ধিও নিশ্চিত করবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। ফলে, লাভবান হবে পুরো দেশের মানুষ। প্রসার হবে ব্যবসা-বাণিজ্য ও পর্যটনের।’
যুবলীগ চেয়ারম্যান আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘পদ্মা সেতু উন্মুক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার যোগাযোগ অত্যন্ত সহজতর হবে।’
পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের ভূমিকার কথা তুলে ধরে বলেন, ‘আপনারা জানেন একসময় বিশ্বব্যাংক এ প্রকল্পে অর্থায়নের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল। সব পরিকল্পনা যখন চূড়ান্ত পর্যায়ে এবং পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হবে, এমন সময় কল্পিত দুর্নীতির অভিযোগে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুতে অর্থায়নের সিদ্ধান্ত বাতিল করে।
‘সুস্পষ্ট অভিযোগ ছাড়া একটি ডায়রির পাতাকে কেন্দ্র করে বিশ্বব্যাংক সরকারের উচ্চপদস্থ কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তারা সরকার এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার বিশ্বব্যাংকের এ চাপের কাছে নত স্বীকার করেনি।’
মির্জা আজম বলেন, ‘আগামী ২৫ জুন, স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভা সফলের জন্য যুবলীগকেই প্রধান দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এই কর্মসূচি সফল করার জন্য আমাদের ধারণার চেয়েও যুবলীগ বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। আমরা প্রত্যাশা করি যুবলীগ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
‘পদ্মা সেতুকে উদ্দেশ্য করে যারা দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র করেছে তারা কিন্তু বাংলাদেশেরই মানুষ। তাদের ষড়যন্ত্র এখনও থেমে নেই। প্রধানমন্ত্রী আমাদের সতর্ক থাকতে বলেছেন। আমরা যদি সজাগ থাকি তাহলে কেউ কোনো ধরনের নাশকতা করতে পারবে না।’
ওই সময় উপস্থিত ছিলেন যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ডা. খালেদ শওকত আলী, মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সনসহ কেন্দ্রীয় ও ২২ জেলার নেতারা।