বিএনপিকে নেতিবাচক রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বলেন, বিএনপি যতদিন নেতিবাচক রাজনীতি করবে ততদিন জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকবে।
রাজধানীর লেকশোর হোটেলে বৃহস্পতিবার জাতীয় বাজেট নিয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত এক সংলাপে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সংলাপে বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও বিএনপি নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
বিএনপিকে উদ্দেশ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনে আসুন, ক্ষমতা নিন, সরকার পরিচালনা করুন।’
এসময় আমির খসরু মাহমুদ বলেন, ‘যারা উন্নয়নে কোনো ভূমিকা রাখছে না, টাকা পাচার করছে তাদের সেই টাকা দেশে ফিরিয়ে আনার সুযোগ দেয়া হচ্ছে তা অত্যন্ত অনৈতিক। যারা দেশে থাকছে বিনিয়োগ করছে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে তারা ২৫ শতাংশ আয়কর দেবে আর যারা দেশে বিনিয়োগ না করে বিদেশে টাকা পাচার করছে তাদের ৭ শতাংশ কর দিয়ে সেই টাকা বৈধ করার সুযোগ দেয়া হচ্ছে।’
সরকার পরিসংখ্যান নিয়ে কারসাজি করছে অভিযোগ করে বিশ্ব ব্যাংকের বরাত দিয়ে আমির খসরু বলেন, ‘২০০৭ সালে বিএনপি সরকার যখন ক্ষমতায় ছিল তখন দেশের পরিসংখ্যান নিয়ে স্কোর ছিল ৭০, এখন যা তার প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে।’
একটি অনির্বাচিত সরকারের বাজেট নিয়ে প্রশ্ন তোলার অনেক জায়গা আছে বলে মন্তব্য করেন আমির খসরু। বলেন, ‘এই সরকার ঠিক কোন ধরনের অর্থনৈতিক মডেল অনুসরণ করছে, সেটা বোধগম্য নয়।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী যে অনির্বাচিত শব্দটি বললেন তা শুনতে শুনতে জনগণের কান ঝালাপালা হওয়ার অবস্থা। এই সরকার অনির্বাচিত নয়, কার্যকর সরকার।’
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর ব্যবহৃত ‘কারসাজি’ শব্দটি নিয়ে প্রবল আপত্তি করেন পরিকল্পনামন্ত্রী। বলেন, তার মতো একজন জ্যেষ্ঠ নেতার কাছ থেকে এমন ভাষা আশা করা যায় না।
তিনি আরও বলেন, ‘সরকার নিশ্চয়ই কারসাজি করে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, নদীর নিচ দিয়ে টানেল তৈরি করতে পারেনি। দেশের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে সেই পরিসংখ্যান নিশ্চয়ই কারসাজি করে তৈরি করা যায় না বা মানুষের গড় আয়ু ৭৫ বছর, তা নিশ্চয়ই কারসাজি করে বানানো হয়নি।’
মূল্যস্ফীতি দেশে এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা স্বীকার করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘অনেকে সরকারের মূল্যস্ফীতি পরিসংখ্যান নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। বিবিএস অনেক বড় পরিসরে মূল্যস্ফীতির পরিসংখ্যান তৈরি করে। সবখান থেকে তথ্য সংগ্রহ করে তারা।’
তিনি বলেন, ‘তবে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য আলাদা সূচক করার প্রয়োজনীয়তা আছে। এতে বোঝা যাবে, তাদের ওপর মূল্যস্ফীতির প্রভাব ঠিক কতটা।’
সংলাপে সিপিডির পক্ষ থেকে উপস্থাপনা পেশ করেন সংস্থাটির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, জাতীয় পার্টি নেতা ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদসহ সংশ্লিষ্টরা।