বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শুধু পদ্মাপাড়ে নয়, সারা দেশে উৎসব চান প্রধানমন্ত্রী

  •    
  • ১৬ জুন, ২০২২ ১৩:১২

উদ্বোধনের দিন আনন্দ করতে গিয়ে যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা তৈরি না হয়, গাড়ি নিয়ে প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে যাতে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা না ঘটে সেদিকে সতর্ক থাকতে দক্ষিণাঞ্চলবাসীসহ সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।

দুর্নীতিচেষ্টার মিথ্যে অভিযোগ, প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা, রাজনৈতিক বাদানুবাদ, গুজবসহ নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে খরস্রোতা পদ্মার বুক চিড়ে নির্মিত পদ্মা সেতু খুলে দেয়া হচ্ছে ২৫ জুন, শনিবার। সেদিন শুধু পদ্মাপাড়ে নয়, সারা দেশে উৎসবমুখরতা দেখতে চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

উদ্বোধনের দিন আনন্দ করতে গিয়ে যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা তৈরি না হয়, গাড়ি নিয়ে প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে যাতে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা না ঘটে সেদিকে সতর্ক থাকতে দক্ষিণাঞ্চলবাসীসহ সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।

রংপুরে পল্লী জনপদ এবং গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় বঙ্গবন্ধু দারিদ্র্য বিমোচন ও পল্লী উন্নয়ন অ্যাকাডেমির (বাপার্ড) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

গণভবন প্রান্ত থেকে বৃহস্পতিবার সকালে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন সরকারপ্রধান।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘উৎসবটা শুধু পদ্মাপাড়ে হবে না, সারা বাংলাদেশে এই উৎসবটা করবেন। আমি চাচ্ছি, বাংলাদেশের প্রত্যেক জেলায় জেলায় উৎসব হোক। কারণ এটা আমাদের জন্য একটা বিরাট চ্যালেঞ্জের ব্যাপার ছিল।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বের সবচেয়ে খরস্রোতা নদী অ্যামাজন এবং তারপরে হচ্ছে পদ্মা। এই নদীতে আমরা যে একটা সেতু করতে পারি, এটা অনেকেরই ধারণা ছিল না। তার ওপর এই সেতুটা হচ্ছে দ্বিতল সেতু। নিচ দিয়ে ট্রেন ওপর দিয়ে গাড়ি যাবে। এটা একটা কঠিন কাজ। পৃথিবীতে এই ধরনের কাজ বোধ হয় এটাই প্রথম। এখানে যে সমস্ত মেশিনারিজ ব্যবহার করা হয়, এটা বোধ হয় আর কোথাও এভাবে হয়নি। এটার যে বাধাটা ছিল সেটাও আপনারা জানেন।’

উৎসবের রং যাতে ফিকে না হয়, সেদিকেও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন সরকারপ্রধান।

তিনি বলেন, ‘আমরা আগামী ২৫ তারিখে পদ্মা সেতু উদ্বোধন করতে যাচ্ছি। সেখানে আমি সবাইকে একটু অনুরোধ করব, সবাই একটু ধৈর্য ধরে…কোনো প্রতিযোগিতায় না গিয়ে বা গাড়ি নিয়ে প্রতিযোগিতা, কে আগে গেল, পরে গেল এসব করবেন না। অর্থাৎ কোনো ধরনের কোনো দুর্ঘটনা যেন না ঘটে, সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন সবাই।’

এই পদ্মা সেতুর মধ্য দিয়ে দক্ষিণাঞ্চল আর ‘অবহেলিত’ থাকবে না বলেও মনে করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। তিনি বলেন, ‘আল্লাহর রহমতে পদ্মা সেতু নির্মাণ হয়ে গেছে। যে দক্ষিণাঞ্চল সারা জীবন অবহেলিত, আর অবহেলিত থাকবে না। কারণ যোগাযোগব্যবস্থা যদি একটা জায়গায় হয়, তাহলে সেখানকার অর্থনৈতিক অবস্থা এমনিতেই উন্নত হয়। সেটা হলো বাস্তবতা।

‘আর আমরা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ, পদ্মাপাড়ের মানুষ সব সময় অবহেলিত ছিলাম। দারিদ্র্য আমাদের নিত্যসঙ্গী। আল্লাহর রহমতে আর সেটা থাকবে না।’

‘যেখানে-সেখানে শিল্প নয়’

দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকার সুযোগ হওয়ায় মানুষের কল্যাণে কাজ করা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘যে কারণে আমাদের উন্নয়নগুলো আজ দৃশ্যমান হচ্ছে। আর মানুষ তার সুফলটা পাচ্ছে।’

দারিদ্র্য বিমোচন করতে হলে চাষযোগ্য জমি রক্ষা করতে হবে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সে জন্য আমরা সারা বাংলাদেশে ১০০টা অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিচ্ছি। যত্রতত্র যেখানে-সেখানে কেউ শিল্প গড়ে তুলতে পারবে না।’

তিনি বলেন, ‘ফসলি জমি নষ্ট করে কেউ শিল্প-কলকারখানা করতে পারবে না। করলে আমরা সেখানে বিদ্যুৎ, গ্যাস কোনো কিছুই দেব না। পরিষ্কার কথা আমাদের। কাজেই এটা কেউ করতে পারবে না।

দেশটাকে পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি চেষ্টা করেছি যে আমাদের পল্লি অঞ্চলে একেবারে তৃণমূলের পড়ে থাকা মানুষগুলো, তাদের ভাগ্যটা কীভাবে পরিবর্তন করা যায়। এবং আমাদের উন্নয়নের যত কর্মসূচি আমরা নিয়েছি সব আপনারা লক্ষ করবেন আমরা কিন্তু গ্রামের মানুষকে সামনে রেখেই করেছি। যেন আমাদের উন্নয়নটা গ্রাম থেকে উঠে আসে।

‘আজকে আমি শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ দিতে পেরেছি। রাস্তাঘাট, পুল, ব্রিজ করে আমরা যোগাযোগের উন্নয়ন করে দিচ্ছি। কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছি।’

দারিদ্র্য বিমোচনে মানুষকে ধারণা দেয়া বা প্রশিক্ষণ দেয়ার মতো প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দেশে খুব কম বলে জানান সরকারপ্রধান।

দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষ বরাবরই অবহেলিত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেই অঞ্চলের মানুষকে যাতে ট্রেনিং দেয়া যায়, দারিদ্র্য বিমোচন কমপ্লেক্স ভবন আমরা প্রথমে কোটালীপাড়ায় গড়ে তুলি। সেটাই পর্যায়ক্রমে আজকে উন্নত হয়ে এখন একটা অ্যাকাডেমিতে উন্নীত হয়েছে।’

গোপালঞ্জের কোটালীপাড়ায় বঙ্গবন্ধু দারিদ্র্য বিমোচন ও পল্লী উন্নয়ন অ্যাকাডেমি গড়ে তোলায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘এটা করার কারণে আজকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল সবার জন্য একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এখান থেকে মানুষ ট্রেনিং নিতে পারছে এবং চমৎকার একটা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। কাজেই আমি মনে করি এটি আমাদের দেশে দারিদ্র্য বিমোচন এবং গবেষণা ও জীবনমান উন্নয়নে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ভূমিকা রাখবে। কারণ আমাদের লক্ষ্যই হচ্ছে গ্রামীণ জনগোষ্ঠী, তাদের জীবনমান উন্নয়ন করা। শহরের মানুষ যে সুযোগটা পায় সেটা গ্রামের সৃষ্টি করা।’

রংপুরের পল্লী জনপদ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে মাত্র ৩০ পার্সেন্ট টাকা দিয়ে একটা ফ্ল্যাটের মালিক হবে। আস্তে আস্তে ধীরে ধীরে ১৫ বছরে বাকি টাকাটা দেবে। এর মধ্য দিয়ে নিজস্ব একটা থাকার জায়গা তার হয়ে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক বিভাগে প্রথমে একটা করে করা হবে এবং চাহিদা অনুযায়ী এটা আরও বাড়ানো হবে। যাতে মানুষ সম্পূর্ণ শহরের নাগরিক সুবিধা পাবে।’

এ বিভাগের আরো খবর