মহানবী হজরত মুহাম্মদকে (সা.)-কে নিয়ে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির দুই নেতার বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাসে স্মারকলিপি জমা দেবে ধর্মভিত্তিক দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, ভারতীয় দূতাবাসে গণমিছিল ও স্মারকলিপি জমা দেয়ার কর্মসূচি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে জড়ো হন ধর্মভিত্তিক দলটির নেতা-কর্মীরা।
সেখানে মিছিল নিয়ে বের হওয়ার আগে সমাবেশ করে দলটি। ভারতীয় দূতাবাসে স্মারকলিপি দিতে যাবেন দলটির নেতারা।
ইসলামী আন্দোলনের গণমিছিলটি শান্তিনগর মোড়ে গিয়ে পুলিশের বাধায় আর এগুতে পারেনি। দলটির নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে মাইকে দলীয়ভাবে প্রচার করতে শোনা যায়, কোনো মিছিল হবে না। আপনারা সবাই নিজ নিজ গন্তব্যে চলে যান।
এর আগে বৃষ্টি উপেক্ষা করে বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে থেকে শান্তিনগর এসে পৌঁছায় গণমিছিলটি। মহানবীকে অপমান মুসলমান, ভারতের দালালেরা হুঁশিয়ার সাবধান’ এমন স্লোগান দিতে শোনা যায় ধর্মভিত্তিক এ দলটির নেতাকর্মীদের।
বৃষ্টি উপেক্ষা করে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে থেকে শান্তিনগর এসে পৌঁছায় গণমিছিলটি। ছবি: নিউজবাংলা
বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে গণমিছিল পূর্ব এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর যুগ্ম-মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান বাংলাদেশের অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের দায়িত্ব কি শুধু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে সুসম্পর্ক রক্ষা করা। আপনারা তো দেশের জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করছেন না।’
তিনি বলেন, তার দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশও ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে চায়। কিন্তু ভারত তা চায় না।
এ সময় তিনি আরও বলেন, ভারতীয় হাইকমিশন এ ঘটনায় একটি বিবৃতি দেন। দুঃখ প্রকাশ করুক। এটা আমরা চাই।
সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পির সৈয়দ রেজাউল করিম বলেন, ‘সরকার মহানবীর (সা.) অবমাননায় কেন নিশ্চুপ এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন।’
তিনি বলেন, সরকার বারবার মুসলমানদের বোকা বানিয়ে ইসলামের নাম নিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করেছে।
এ সময় বিএনপিরও সমালোচনা করেন চরমোনাই পির। বলেন, ‘বিএনপি নবীর অপমানে দায়সারা ছোট্ট একটা বিবৃতি দিয়েছে। তারা যে বিবৃতি দিয়েছে, এটা যে ধোঁকাবাজি এটা বাংলাদেশের মানুষ বোঝে।’
ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. আ. আহাদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘মিছিলকারীদের পক্ষে ৫ জনের প্রতিনিধিদল স্মারকলিপি নিয়ে গেছে। তারা ভারতীয় দূতাবাসের বাংলাদেশ প্রতিনিধির কাছে স্মারকলিপি দেবেন। আর এ দিকে শান্তিনগর মোড়ে মিছিল শেষ করে শান্তিপূর্ণভাবে চলে গেছেন অন্যরা।’
এর পর সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয় বলেও জানান তিনি।
এর আগে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে সমাবেশ শেষ করে মিছিল শুরু করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর নেতাকর্মীরা। মিছিল চলাচলের কারণে রাজধানীর পল্টন থেকে শান্তিনগর পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ থাকে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীর নেতৃত্বে ৫ সদস্যের প্রতিনিধি দলে আছেন- যুগ্মমহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মাদ ইমতিয়াজ আলম ও সহকারী সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক সৈয়দ বেলায়েত হোসেন।