কিশোরগঞ্জের মিঠামইন হাওরে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে ফেরার পথে নৌকা থেকে পড়ে নিখোঁজ ছাত্রলীগ নেতার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
করিমগঞ্জ উপজেলার সুতারপাড়া ইউনিয়নের আলীরচর এলাকায় ধনু নদী থেকে বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এর আগে করিমগঞ্জ উপজেলার সুতারপাড়া ইউনিয়নের বালিখলা ফেরীঘাটের পাশে চং নোয়াগাও এলাকায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নৌকা থেকে পড়ে গিয়ে নিখোঁজ হন তিনি।
২৮ বছর বয়সী ওই ছাত্রলীগ নেতার নাম হাবিবুল্লাহ হাবিব। তিনি কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার মারিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহ্বায়ক।
কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক মোবারক আলী নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ঘটনাস্থল থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে তার মরদেহ ভেসে উঠলে স্থানীয়রা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। পরে করিমগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তার মরদেহ উদ্ধার করেন।
সুতারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আজ ভোর ৫টার দিকে আলীরচর এলাকায় একটি মরদেহ ভাসতে দেখে সেখানকার জেলেরা আমাকে খবর দেয়। পরে পুলিশের সহায়তায় মরদেহ উদ্ধার করা হয়।’
তিনি জানান, যেখান থেকে নিখোঁজ হয়েছিলেন তার তিন কিলোমিটার দক্ষিণ থেকেই তার মরদেহটি উদ্ধার করা হয়েছে।
হাবিবুল্লাহ হাবিবের বন্ধুদের বরাতে মারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান হলুদ জানান, মঙ্গলবার সকালে মারিয়া থেকে ৬ থেকে ৭ জন বন্ধু মিলে মিঠামইনের হাওরের অলওয়েদার সড়কে ঘুরতে গিয়েছিলেন। ঘোরা শেষে সেখান থেকে বালিখলা ফেরার পথে প্রচণ্ড বাতাসের সঙ্গে নদীতে ঢেউ শুরু হয়। এ সময় নৌকার পেছন থেকে পানিতে পড়ে যায় হাবিব। সঙ্গে সঙ্গে নৌকা ঘুরিয়ে তাকে তুলতে গেলেও আর খোঁজ পাওয়া যায়নি।
কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা আবু জর গিফারী বলেন, ‘নিখোঁজের পর খবর পেয়ে জেলা সদর থেকে ডুবুরি দলের একটি টিম সেখানে গিয়ে উদ্ধারের চেষ্টা করেও সেদিন ব্যর্থ হয়। পরদিনও দিনভর উদ্ধার কাজ অব্যাহত ছিল। সেদিনও মরদেহটি পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, প্রবল স্রোতের কারণে যেখানে নিখোঁজ হয়েছিল মরদেহটি, তার চেয়ে অনেক দূরে চলে যায়।’
হাবিবুল্লাহ হাবিবের বড় ভাই ইব্রাহীম খলিলুল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হাবিবের মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে আমাদের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। তারা ৬ থেকে ৭ জন একসঙ্গে ঘুরতে গেল, আর সাথে থাকা একজন নিখোঁজ হয়ে গেল। তারা বিন্দুমাত্র চেষ্টাও করল না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার ভাই একেবারেই যে সাঁতার জানতো না, তাও না। আমাদের ধারণা তাকে নৌকা থেকে ফেলে দেয়া হয়েছে। আমরা বর্তমানে থানায় আছি। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।’
করিমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুল আলম সিদ্দিকী নিউজবাংলাকে বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হবে। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।