পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধুলারসর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে ১ হাজার ৩৫৯ ভোটে হারিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাফেজ আব্দুর রহিম।
ইউপি নির্বাচনের ভোট শেষে বুধবার সন্ধ্যায় বেসরকারিভাবে ঘোষণা দেয়া ফলে জয়ী ঘোষণা করা হয়েছে আব্দুর রহিমকে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কলাপাড়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবদুর রশিদ।
পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনের ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমানের বাড়ি এই ধুলারসর ইউনিয়নে। সেখানে হাতপাখার প্রার্থীর কাছে নৌকার মোদাচ্ছের হাওলাদারের হারের পেছনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় পর্যায়ের অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে দায়ী করেছেন নেতারা।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবদুর রশিদ জানান, হাতপাখার আব্দুর রহিম পেয়েছেন ৪ হাজার ৩১২ আর নৌকার প্রার্থী মোদাচ্ছের পেয়েছেন ২ হাজার ৯৫৩ ভোট।
ভোটে প্রার্থীর জয়ে উচ্ছ্বসিত ইসলামী আন্দোলনের পটুয়াখালী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. ওহিদুজ্জামান।
তিনি বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে মানুষের অধিকার আদায়ের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। মানুষ ভোট দিতে পারত না, স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারত না। ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের অত্যাচারে সাধারণ মানুষ দিশেহারা অবস্থায় ছিল। এসব বিষয় নিয়ে আমরা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছেছি।
‘আজকে ধুলারসরের রেজাল্ট তারই প্রমাণ। দেখেন এই ইউনিয়নটি হলো বর্তমান এমপি সাহেবের নিজ ইউনিয়ন। কিন্তু আমরা আগেই জানতাম যে এখানে আমরা সুবিধাজনক অবস্থায় আছি।’
এমপির এলাকায় নৌকার পরাজয়ের বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ‘মূলত আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের ফসল এটি। যে কারণে নৌকা প্রতীকের বরাদ্দ সঠিকভাবে হয়নি। ওখানে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন, বিএনপিরও একজন প্রার্থী ছিলেন। তারা সবাই চেষ্টা করেছেন নৌকাকে ঠকাতে। তাই হয়েছে।
‘তা ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি নির্বাচনি মাঠে না থাকায় ইসলামী আন্দোলন সেই গ্যাপটা পূরণ করার চেষ্টা করছে।’
কী ধরনের কোন্দল আছে- জানতে চাইলে ওই নেতা বলেন, ‘এখানে বর্তমান ও সাবেক এমপির মধ্যে প্রকাশ্য ও পরোক্ষভাবে গ্রুপিং আছে। ধুলারসরে নৌকা হারার পেছনে সেটিও অন্যতম কারণ বলে মনে করি। কারণ ওখানে নৌকা হারলে কেন্দ্রে বর্তমান এমপির জনপ্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা সহজ হবে প্রতিপক্ষদের। আজ কিন্তু তাই হয়েছে।
‘এতে লস হলো আমাদের। আমরা যারা জন্ম থেকে আওয়ামী লীগ করে আসছি। এই কলাপাড়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এত উন্নয়ন করেছেন, তার পরও আমরা একটি নৌকাকে সমুদ্রের পানিতে ডুবিয়ে দিলাম। কষ্ট হয়। দুঃখও হয় এসব নেতাদের জন্য। কিন্তু আমরা তো অসহায়।’
ধুলারসরে নৌকাডুবির বিষয়ে মন্তব্য জানতে এমপি মুহিবুরকে একাধিকবার কল করা হলেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
বুধবারের নির্বাচনে পটুয়াখালী সদর উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নের মধ্যে তিনটিতে আওয়ামী লীগ এবং দুটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। দশমিনা ও কলাপাড়া উপজেলার দুই ইউনিয়নে জয় পেয়েছে নৌকা।