কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে টিকটকে ভিডিও করার জন্য রাস্তায় স্কুলগামী মেয়েদের টার্গেট করত একটি চক্র। শুধু রাস্তাতেই নয়, স্কুলের শ্রেণিকক্ষে ক্লাস-পরীক্ষা চলাকালীন মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে উত্ত্যক্ত করত তারা। প্রতিবাদ করায় চার শিক্ষিকাকে লাঞ্ছিত করে চক্রের সদস্যরা।
এ ঘটনার মূলহোতাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
তাদের মধ্যে মূলহোতা আল আমিন ওরফে সোহেল ওরফে ভিআইপি রানা ওরফে প্রিন্স রানা। বাকি তিনজনের বয়স ১৮ বছরের কম।
মঙ্গলবার রাতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১৪-এর একটি দল কিশোরগঞ্জ ও রাজধানীর গুলিস্তান এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে বুধবার দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, ‘গত ১২ জুন করিমগঞ্জের জঙ্গলবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রাক-নির্বাচনি ও দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা চলাকালীন কয়েকজন বহিরাগত ছেলে বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় তলায় উঠে ছবি তোলার চেষ্টা করে। এ সময় স্কুলের কয়েকজন শিক্ষিকা তাদের চলে যেতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা শিক্ষিকাদের দেখে নেয়ার হুমকি দেয়। একই দিন বিকেলে স্কুল শেষে কয়েকজন শিক্ষিকা অটোরিকশাযোগে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে তারা অটোরিকশার গতিরোধ করে। এ সময় তারা শিক্ষিকাদের লাঞ্ছিত করে।’
এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে স্কুলের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা বন্ধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে।
ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক বাদী হয়ে করিমগঞ্জ থানায় মামলা করেন। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারিত হয়।
র্যাব কর্মকর্তা জানান, মঙ্গলবার রাতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১৪-এর একটি দল কিশোরগঞ্জ ও রাজধানীর গুলিস্তান এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘গ্রেপ্তার আল আমিন এলাকায় কিশোরদের নিয়ে সংঘবদ্ধ চক্র গড়ে তোলেন। তিনি তার এলাকায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রীদের বেশ কিছুদিন ধরে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। চক্রের অন্য সদস্যরাও বিভিন্ন সময় ছাত্রীদের স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে উত্ত্যক্ত করত। কোনো ছাত্রী প্রতিবাদ করতে চাইলে তাদের অ্যাসিড নিক্ষেপের হুমকি দেয়া হতো।’
গ্রেপ্তাররা কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য দাবি করে র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘গ্রেপ্তারদের মোবাইলে দেখা গেছে যে তাদের ইমো গ্রুপ ও টিকটকে মেয়েদের সঙ্গে জোর করে একাধিক ভিডিও আছে। তারা মূলত রাস্তা ও স্কুলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের টিকটক ভিডিও ধারণ করত।’