বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কুমিল্লায় ফল নিয়ে টানটান উত্তেজনা

  •    
  • ১৫ জুন, ২০২২ ১৮:১১

‘ঘরের শত্রু’ নিজামউদ্দিন কায়সার এই নির্বাচনে সাক্কুর জীবনের প্রথম পরাজয়ের কারণ হতে পারে বলে শুরু থেকেই আলোচনা হচ্ছিল। বলা হচ্ছিল, স্বেচ্ছাসেবক দল থেকে পদত্যাগ করে কায়সারের ভোটে দাঁড়ানোর ‘আসল লক্ষ্য’ ছিল ‘সাক্কু ঠেকাও’।

শান্তিপূর্ণ ভোট শেষে একের পর এক কেন্দ্রের ফলাফল যখন আসতে থাকে, তখন শুরু থেকেই দুই প্রধান প্রার্থী আওয়ামী লীগের আরফানুল হক রিফাত ও গত দুইবারের মেয়র বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত নেতা মনিরুল হক সাক্কুর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ইঙ্গিত মিলতে থাকে।

দুই জনের মধ্যে ভোটের ব্যবধান শুরু থেকেই ছিল কম। একবার সাক্কু এগিয়ে যান, তো আরও কয়েকটি কেন্দ্রের ফল আসলে দেখা যায়, এগিয়ে গেছেন রিফাত।

সন্ধ্যা পৌনে আটটা পর্যন্ত ঘোষিত ফলাফলে নৌকা প্রতীক নিয়ে রিফাত কিছুটা এগিয়ে রয়েছেন। তবে সাক্কু ও কায়সারের ভোট যোগ করলে নৌকার চেয়ে অনেক বেশি হয়।

৭২ কেন্দ্রে নৌকায় ভোট পড়েছে ৩৩ হাজার ৭৯৩টি। সাক্কুর ঘড়িতে পড়েছে ৩২ হাজার ৩২২ টি। কায়সারের ঘোড়ায় ভোট পড়েছে ১৭ হাজার ৭৮৮টি।

অর্থাৎ ৭০ শতাংশ কেন্দ্রের ফলে নৌকার প্রার্থী এক হাজার ৪৭১ ভোটে এগিয়ে আছেন।

শেষ পর্যন্ত রিফাত জয় পান ৩৪৩ ভোটে।

নৌকা নিয়ে রিফাত ভোট পেয়েছেন ৫০ হাজার ৩১০টি, ঘড়ি প্রতীকে সাক্কুর পক্ষে রায় দিয়েছেন ৪৯ হাজার ৯৬৭ জন। ভোটের ব্যবধান ৩৪৩। সাক্কুর এই পরাজয়ে প্রধান ভূমিকায় ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা নিজামউদ্দিন কায়সার, যিনি ভোট পেয়েছেন ২৯ হাজার ৯৯টি।

এই নির্বাচনে আরও দুই জন প্রার্থী ছিলেন। তাদের ভোটের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য নয়।

ইভিএমে ভোট হলেও ফল ঘোষণায় বিলম্বের একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহেদুন্নবী চৌধুরী। তিনি বলেন, বৃষ্টির কারণে প্রিজাইডিং অফিসারের আসতে সময় লাগছে। এ কারণে ফল জানাতে কিছুটা দেরি হচ্ছে।’

‘ঘরের শত্রু’ নিজামউদ্দিন কায়সার এই নির্বাচনে সাক্কুর জীবনের প্রথম পরাজয়ের কারণ হতে পারে বলে শুরু থেকেই আলোচনা হচ্ছিল। বলা হচ্ছিল, স্বেচ্ছাসেবক দল থেকে পদত্যাগ করে কায়সারের ভোটে দাঁড়ানোর ‘আসল লক্ষ্য’ ছিল ‘সাক্কু ঠেকাও’।

২০১২ সালে সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে সাক্কু জেতেন ৩০ হাজার ভোটে। হারান আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা আফজল খানকে।

২০১৭ সালের নির্বাচনে সাক্কু হারান আফজল কন্যা আঞ্জুম সুলতানা সীমাকে। জয়ের ব্যবধান কমে আসে ১১ হাজারে।

এবার বিএনপি ভোট বর্জন করায় সাক্কু লড়েন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। দলীয় সিদ্ধান্ত না মানায় তাকে হারাতে হয় দলীয় পদও।

ওদিকে সাক্কুর বিরোধী অংশের ভরসায় ভোটে দাঁড়ান স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা নিজামউদ্দিন কায়দার।

কুমিল্লা মহানগরে বিএনপি দৃশ্যত দুই ভাগে বিভক্ত। এক অংশের নেতৃত্ব দেন সাক্কু, আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক সংসদ সদস্য আমিনুর রশীদ ইয়াসিন। এই ইয়াসিনের শ্যালক হলেন কায়সার।

সাক্কু ও ইয়াসিনের বিরোধ কুমিল্লার মানুষজনের কাছে খুবই পরিচিত ইস্যু। দুই নেতার দ্বন্দ্বের কারণে দলীয় সভা আলাদা স্থানে হয়ে আসছে সেখানে।

কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো কর্মসূচির ডাক দেয়া হলে সাক্কুর অনুসারীরা দক্ষিণ জেলা বিএনপি অফিসে অবস্থা নেন। অন্যদিকে ইয়াসিন সমর্থকরা একত্রিত হন ধর্মসাগর পাড়ে তার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে।

কায়সার কত ভোট কাটবেন, শুরু থেকেই সেই আলোচনা ছিল। প্রাথমিক ফলাফলে দেখা যাচ্ছে নৌকার তুলনায় সাক্কু ও কায়সারের সম্মিলিত ভোট অনেকটাই বেশি।

বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে প্রথম ভোটের যে পরীক্ষা হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি চোখ কুমিল্লাতেই।

সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া ভোট শেষ পর্যন্ত হয়েছে শান্তিপূর্ণ। প্রথমবারের মতো কোনো ভোটে সব কেন্দ্রে বসানো হয় সিসিটিভি ক্যামেরা। এই ভোটে বলার মতো কোনো সহিংসতা বা অভিযোগ উঠেনি। এমনকি প্রার্থীরাও তেমন কোনো অভিযোগ করেননি।

তবে একটি কেন্দ্রে গোপন কক্ষে বাইরের মানুষের উপস্থিতি এবং একটিতে গোপন কক্ষে পোলিং কর্মকর্তার উঁকি দেয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমে এসেছে।

ইভিএমে নেয়া এই ভোটে ধীরগতি নিয়েই শুরু থেকে ছিল আলোচনা। ভোটারদের অনভ্যস্ততা ছাড়াও কোথাও কোথাও মেশিনে ত্রুটির কারণে বেগ পেতে হয়।

বেলা ৪টায় ভোট শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কোনো কোনো কেন্দ্রে ভোট চলেছে ৫টা পর্যন্ত।

পৌনে ছয়টার দিকে রিটার্নিং কর্মকর্তা একে একে ফল ঘোষণা করতে থাকেন।

এ বিভাগের আরো খবর