বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সিলেটে সিটি করপোরেশনই শীর্ষ বিলখেলাপি

  •    
  • ১৫ জুন, ২০২২ ১৪:৪৫

সিলেট সিটি করপোরেশনের কাছে বিল বাবদ বিদ্যুৎ বিভাগের পাওনা প্রায় ২০ কোটি টাকা। নগর কর্তারা বলছেন, বিদ্যুৎ বিভাগের কাছেও বিপুল অঙ্কের টাকা পাওনা আছে তাদের।

গৃহকর, ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন ফি, পানির বিলসহ বিভিন্ন সেবার বকেয়া বিল ও কর আদায়ে প্রায়ই অভিযান চালায় সিলেট সিটি করপোরেশন। জরিমানা করা হয় খেলাপি গ্রাহকদের। অথচ এই প্রতিষ্ঠানটিই সিলেটে বিদ্যুতের সবচেয়ে বড় বিলখেলাপি।সিলেট সিটি করপোরেশনের কাছে বিল বাবদ বিদ্যুৎ বিভাগের পাওনা প্রায় ২০ কোটি টাকা। নগর কর্তারা বলছেন, বিদ্যুৎ বিভাগের কাছেও বিপুল অঙ্কের টাকা পাওনা আছে তাদের।সিলেটে বিদ্যুৎ বিভাগের বিল বকেয়া পড়ে আছে ৮৬ কোটি টাকা। বেশির ভাগ বকেয়াই সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের। এর মধ্যে এগিয়ে সিলেট সিটি করপোরেশন।গত ১ জুন জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রাহক বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করলে সংযোগ কেটে দেয়ার নির্দেশনা দেন।প্রধানমন্ত্রীর এমন নির্দেশনার পর থেকে বকেয়া বিল আদায়ে জোরেশোরে অভিযানে নেমেছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, সিলেট। বকেয়া না দেয়ায় ইতোমধ্যে সিলেট জেলা স্টেডিয়ামের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে বকেয়া আদায় করা গেলেও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে পাওনা টাকা আদায়ে গলদঘর্ম হতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সিলেট কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সিলেট অঞ্চলে বিদ্যুতের গ্রাহক সাড়ে ৪ লাখ। তাদের কাছে বিদ্যুতের বিল বকেয়া রয়েছে প্রায় ৮৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে সিলেট সিটি করপোরেশনের কাছে বকেয়া প্রায় ২০ কোটি টাকা। সিলেট জেলা স্টেডিয়ামের কাছে পাওনা পৌনে ২ কোটি টাকা, রেলওয়ের কাছেও পাওনা প্রায় পৌনে ২ কোটি টাকা। এর মধ্যে ছাতক রেলওয়ে স্টেশনে বকেয়া ১ কোটি টাকা, কুলাউড়া স্টেশনে ৫০ লাখ টাকা এবং সিলেট রেল স্টেশনে বকেয়া ২০ লাখ টাকা। ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কাছে বকেয়া আছে ৬০ লাখ টাকা।এ ছাড়া সিলেট অঞ্চলের বিভিন্ন মসজিদ-মন্দিরে বকেয়া আছে ৭০ লাখ টাকা। বেসরকারি পর্যায়ে গ্রাহকদের বাসাবাড়ি, শপিং মল, মিল, ইন্ডাস্ট্রিতেও বকেয়া রয়েছে বড় অঙ্কের টাকা।বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল কাদির বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বকেয়া বিল উদ্ধারের নির্দেশ দিয়েছেন। এই নির্দেশনার পর থেকে আমরা জোরেশোরে অভিযানে নেমেছি। ইতোমধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ১৩ থেকে ১৪টি অভিযান চালানো হয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।’সিটি করপোরেশনের বকেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আগে তাদের কাছে বকেয়া ছিলে প্রায় ৩০ কোটি টাকা। ইতোমধ্যে দুই দফায় ১০ কোটি টাকা দিয়েছে। আরও ২০ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। এই মাসে আরও কিছু টাকা দেবেন বলে মেয়র কথা দিয়েছেন।’তিনি বলেন, ‘জেলা স্টেডিয়ামের বকেয়া টাকা আদায় নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। তারা কেউই এই টাকার দায় নিচ্ছে না। ক্রীড়া সংস্থার স্থানীয় নেতারা বলছেন, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বিল দেবে। আর ক্রীড়া পরিষদ বলছে, স্থানীয়ভাবে বিল দেয়া হবে। এই বিল আদায়ে আমরা বারবার চিঠি দিচ্ছি। বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের সাথে কয়েকবার মিটিংও করেছি। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। বিল না দেয়ায় আমরা তাদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছি।’ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে বড় অঙ্কের বকেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আগে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো বিদ্যুতের টাকা দিতে না। এরশাদ সাহেব মৌখিকভাবে মসজিদ-মন্দিরের বিদ্যুৎ বিল মওকুফ করেছেন এমন একটি অজুহাতে তারা অনেক দিন টাকা দেননি। তাই অনেক টাকা জমে গেছে। তবে এখন এই প্রবণতা কমেছে। এখন অনেকেই বিল দিচ্ছেন।’আগামী দুই তিন মাসের মধ্যে বকেয়া অনেকাংশেই কমে আসবে জানিয়ে প্রকৌশলী মো. আব্দুল কাদির বলেন, ‘বেসরকারি গ্রাহকদের কাছ থেকে বিল আদায়ে আমাদের তেমন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে না। কিন্তু সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ে বিপদে আছি। এগুলোতে তো তেমন কিছু করা যায় না। ভ্রাম্যমাণ আদালতও চালানো যাচ্ছে না।’গত এক মাসে বিভিন্ন মোবাইল ফোন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের টাওয়ারগুলো থেকেই বকেয়া প্রায় দেড় কোটি টাকা বিল আদায় করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, গ্রাহক নিয়মিত বিল দিলে বিদ্যুতের ভর্তুকি অনেক কমে আসবে। বিদ্যুতের দাম তেমন বাড়ানো লাগবে না।তবে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর দাবি বিদ্যুৎ বিভাগের কাছে উল্টো টাকা পায় সিটি করপোরেশন। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দেনাপাওনা উভয়পক্ষেই আছে। বিদ্যুতের খুঁটি ও তারের জন্য তারা আমাদের সড়ক ব্যবহার করে। অনেক সময় এগুলোর রক্ষণাবেক্ষণও আমাদের করতে হয়। এ ছাড়া মাটির নিচ দিয়ে বিদ্যুতের তার নিতে অনেক সড়ক তারা খুঁড়াখুঁড়ি করেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত এর ক্ষতিপূরণ আমরা পাইনি। সব মিলিয়ে তাদের কাছে আমরা প্রায় ৪০ কোটি টাকার মতো পাই।’বিদ্যুৎ বিভাগের কাছে এই পাওনার কথা জানিয়েছেন উল্লেখ করে মেয়র বলেন, ‘তারাও তো আমাদের টাকা দিচ্ছেন না।’তবে বিদ্যুতের বকেয়া বিল পরিশোধ না করা ও সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহিউদ্দিন সেলিম।

এ বিভাগের আরো খবর