কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে।
বুধবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া এ ভোট চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
এ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো বড় পরিসরে ভোটের আয়োজন করছে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন।
কুমিল্লা সিটিতে ২৭টি ওয়ার্ডে ভোটার রয়েছে ২ লাখ ২৯ হাজার ৯২০ জন। এদের মধ্যে ১ লাখ ১৭ হাজার ৯২ জন নারী এবং ১ লাখ ১২ হাজার ৮২৬ জন পুরুষ। ট্রান্সজেন্ডার ভোটার রয়েছেন দুজন।
দুটি পৌরসভাকে একীভূত করে ২০১১ সালে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন গঠন করে সরকার। এরপর ২০১২ ও ২০১৭ সালে দুবার নির্বাচন হয়।
দুটি নির্বাচনেই জয় পান মনিরুল হক সাক্কু। এবারও তিনি প্রার্থী হয়েছেন, তবে দল ভোট বর্জন করায় তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়াই করছেন।
সাক্কুর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের আরফানুল হক রিফাত। স্বেচ্ছাসেবক দলের আরেক নেতা নিজামউদ্দিন কায়সারও আছেন ভোটের মাঠে।
প্রতি কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা
কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে একজন আঙুলের ছাপ দিয়ে তার পরিচয় নিশ্চিত করার পর অন্য কেউ তার হয়ে যেন বাটনে টিপ দিতে না পারে, সেটি নিশ্চিতের চেষ্টা করছে নির্বাচন কমিশন।
ভোটকেন্দ্রের ভেতর নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কর্মী, প্রার্থীদের এজেন্ট আর ভোটারের বাইরে যেন কেউ না থাকতে পারে, সেটি নিশ্চিত করতে দূর থেকেও পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে প্রথমবারের মতো ব্যবহার করা হচ্ছে ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ক্যামেরা, তবে গোপন বুথ (যেখানে ঢুকে ভোটাররা তাদের প্রার্থী বাছাই করবেন) এই ক্যামেরার আওতার বাইরে থাকবে।
বুধবার কুমিল্লা সিটি এলাকা ছাড়াও ১৩৫টি ইউনিয়ন, ৫টি পৌরসভা ও একটি উপজেলায় ভোটের তফসিল দিয়েছিল কমিশন, তবে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মী ও প্রার্থীদের আচরণ-হুমকি, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের ওপর হামলাসহ নানা ঘটনায় ৯টি এলাকায় ভোট স্থগিত করা হয়েছে, যার মধ্যে আটটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা।
কুমিল্লা সিটি ছাড়াও পাঁচ পৌরসভায় ৫৯০টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেছে নির্বাচন কমিশন।
কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কুমিল্লায় ১০৫টি ভোটকেন্দ্রের ৬৪০টি ভোটকক্ষের প্রতিটিতে বসানো হয়েছে সিসিটিভি। কেউ কেন্দ্রের ভেতরে কোনো ধরনের জোর খাটানোর চেষ্টা করলে তা ক্যামেরায় ধরা পড়বে।
ভোটের পরিবেশ সুষ্ঠু না হলে কোনো বুথ বা কেন্দ্রে বা গোটা নির্বাচনি এলাকায় নির্বাচন বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা আছে।
নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের কমিশন এ ব্যাপারে খুবই শক্ত। জোর করে ভোট আদায় করার সুযোগ নাই। নির্বাচনের দিন যদি কোনো তথ্য আসে যে অনিয়ম হয়েছে, তাহলে আমরা নির্বাচন বন্ধ করে দেব।’
ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘একটা অভিযোগ থাকে ভোটকেন্দ্রে মানুষ ঢুকে অনেক সময় কারসাজি করে। সেটি হয় কী হয় না, সেটা প্রমাণের ব্যাপার।’
সিসি ক্যামেরায় ভোটের আগের দিন থেকে ভোটের পরের দিন সকাল পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে রেকর্ডিং হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যদি কেউ অভিযোগ দেয় কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়েছে, ফলস ভোট দেয়া হয়েছে, তাহলে আমরা দেখে কিন্তু ব্যবস্থা নিতে পারব।’