‘সরকারের নানা প্রযুক্তিগত উদ্যোগের ফলে দেশে গ্রাম ও শহরের মধ্যে বৈষম্য দূর হয়েছে। এখন সাড়ে ৬ লাখ ফ্রি-ল্যান্সার ঘরে বসে বছরে ৫০০ মিলিয়ন (৫ হাজার কোটি টাকা) ডলার আয় করছে। এছাড়া অন্যান্য আইটি সেক্টর মিলিয়ে প্রায় ২০ লাখ মানুষ বছরে ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আনছে।’
তথ্য এবং যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক মঙ্গলবার খুলনা হাই-টেক পার্কের ভিত্তি স্থাপন শেষে এসব তথ্য জানান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘২০২৫ সালের মধ্যে প্রযুক্তি শিল্পে ৩০ লাখ তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান হবে এবং এই সেক্টর থেকে আয় হবে ৫ বিলিয়ন ডলার। এসব লক্ষ্যকে সামনে রেখেই দেশের ১২ জেলায় হাইটেক পার্ক নির্মাণ কাজ শুরু হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য জেলাতেও হবে।
‘খুলনায় হাইটেক পার্ক নির্মাণে একশ’ ৭০ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। ২০২৪ সালের ৩০ জুন এটির নির্মাণ কাজ শেষ হবে। সাড়ে তিন একর জায়গায় নিমিতব্য সাততলা ভবনের মধ্যে ট্রেনিং, ইনকিউবেশন. স্টার্টআপ ও বিজনেস ফ্লোর থাকবে।’
তথ্য-প্রযুক্তির এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে খুলনাবাসীকে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
পলক বলেন, ‘খুলনা এলাকার মানুষ অনেক প্রযুক্তি সচেতন। আইটি সেক্টরে খুলনায় অনেক উদ্যোক্তা আছে। অনেকে ফ্রি-ল্যান্সিং করে, সরকারের লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং প্রজেক্টের মাধ্যমে রেমিট্যান্স যোদ্ধা হিসেবে বএদশি মুদ্রা দেশে আনছে। এই হাইটেক পার্ক এ অঞ্চলের মানুষের আইটি দক্ষতা বাড়ানোর সুযোগ করে দেবে।
‘খুলনা হাইটেক পার্কে প্রতিবছর এক হাজার তরুণ-তরুণীকে আইটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। সে সুবাদে বিভিন্ন সেক্টরে প্রায় তিন হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।’
খুলনায় রূপসা নদীর তীরে (দাদাম্যাচ ফ্যাক্টরির সামনে) এই পার্কের ভিত্তি স্থাপন করেন খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।
এ সময়ে কেসিসি মেয়র বলেন, ‘কেউ কথা রাখে না; কথা রাখেন কেবল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি যা বলেন তা করে দেখান। তিনি বলেছিলেন ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়বেন, তিনি তা করে দেখিয়েছেন। সেই ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল এখন আমরা সবাই ভোগ করছি। ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন যে নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু করবেন, তিনি তা করে বিশ্বের দরবারে দেখিয়েছেন আমরাও পারি। পদ্মা সেতু উদ্বোধন শেষে ঢাকার সঙ্গে খুলনার যোগাযোগ বাড়বে এবং এর সুফল পেতে হলে এখনই খুলনাকে প্রস্তুত হতে হবে।’
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য সেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন তথ্য এবং যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, খুলনায় ভারতের সহকারী হাইকমিশনার অসীম কুমার শান্ত্রা, জেলা প্রশাসক মনিরুজ্জামান তালুকদার ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সরদার রকিবুল ইসলাম।
স্বাগত জানান আইটি/হাই-টেক পার্কের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডা. বিকর্ণ কুমার ঘোষ। ধন্যবাদ জানান প্রকল্প পরিচালক এ কে এ এম ফজলুল হক।