চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি ডিপোতে রাখা কনটেইনার থেকে ধোঁয়া ওঠার খবরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে দমকল বাহিনী আসার আগেই মিলিয়ে যায় ধোঁয়া।
সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন ও বিস্ফোরণের ভয়াবহতা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আরেকটি কনটেইনার থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ডিপোর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
পতেঙ্গা ভারটেক্স কনটেইনার ডিপোতে সোমবার রাত পৌনে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন সিইপিজেড ফায়ার স্টেশনের সাব-স্টেশন অফিসার মো. শহীদুল্লাহ।
তিনি বলেন, ‘ডিপোর ভেতর একটি কনটেইনার থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখে আমাদের খবর দেয়া হয়। ঘটনাস্থলে গিয়ে আমাদের তেমন কিছু করতে হয়নি, এমনিতেই এটা বন্ধ হয়ে গেছে।
‘ওটা তুলা বোঝাই একটি কনটেইনার ছিল। রপ্তানির জন্য রাখা এসব কনটেইনারে নাকি এক ধরনের ওষুধ ব্যবহার করা হয়, বৃষ্টিতে সে ওষুধ থেকে এ ধোঁয়ার সৃষ্টি হতে পারে।’
ওষুধটি দাহ্য পদার্থ কী না তা এখনও জানেন না এই ফায়ার কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, ‘ওই কনটেইনারের আশপাশে আরও কনটেইনার ছিল। এগুলোর ক্ষতি হয়নি। এমনকি ধোঁয়া ওঠা কনটেইনারের তুলাও ঠিকঠাক আছে।’
ভারটেক্স অফ-ডক লজিস্টিক সার্ভিসেস লিমিটেডের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক শেখ মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আসলে যখন এরকম কটন বাইরে থেকে নিয়ে আসা হয় তখন এগুলোকে এক ধরনের ওষুধ দিয়ে কোয়ারেন্টিন করে রাখা হয়। এই ওষুধটা কী আসলে আমি জানি না। তবে পোকা-মাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষায় এটা দেয়া হয় সাধারণত। এটি কৃষি অধিদপ্তরের লোকজন এসে দিয়ে যান।
‘শনিবার ডিপোতে ওষুধ দেয়া হয়েছিল। আমাদের ধারণা দুদিনের প্রচণ্ড তাপ ও আজকের বৃষ্টিতে সেগুলো থেকে ধোঁয়ার সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টা আমাদের জানানোর সঙ্গে সঙ্গে কর্মচারীদের ফায়ার এক্সটিঙ্গুইশার নিয়ে রেডি থাকতে বলেছি, ফায়ার সার্ভিসকে জানাতে বলেছি। ফায়ার সার্ভিস এসে কিছুই পায়নি। আমরাও ঘটনাস্থলে গিয়ে ধোঁয়ার কোনো আলামত পাইনি।’
নেদারল্যান্ডস ও বাংলাদেশের যৌথ মালিকানাধীন (জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানি) প্রতিষ্ঠান বিএম কনটেইনার ডিপো সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকায়। সেখানে গত ৪ জুন রাত ৯টার দিকে আগুন লাগে।
- আরও পড়ুন: বিএম ডিপোতে আরও দেহাবশেষ
একে একে ছুটে যায় চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিট। নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলা থেকেও পরে যোগ দেয় কয়েকটি ইউনিট। পরদিন সকাল পর্যন্ত আগুন নেভাতে আসা ইউনিটের সংখ্যা বেড়ে হয় ২৫টি।
সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে ৮৭ ঘণ্টা পর। ছবি: নিউজবাংলা
তবে কনটেইনারে থাকা রাসায়নিক পদার্থের কারণে দফায় দফায় বিস্ফোরণে বাড়ে আগুনের ভয়াবহতা। অন্তত ৮৭ ঘণ্টা পর ৮ জুন দুপুরে বিএম কনটেইনার ডিপোর আগুন নেভে। ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এ পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে ৪৯ জনের মরদেহ।