মানিকগঞ্জের সিংগাইরে বৃদ্ধা মাকে গোয়ালে আটকে রাখা সেই দুই ছেলে ও পুত্রবধূকে জামিন দিয়েছে আদালত।
মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক আব্দুন নূর ৮৫ বছর বয়সী ওই বৃদ্ধার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই সোমবার বেলা ৪টার দিকে তাদের জামিন দেন।
সিংগাইর উপজেলার চারিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান সাজেদুল আলম স্বাধীন নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘ছেলেরা আর ছেলের বউরা ছাড়া আয়েশা বেগমকে দেখার মতো কেউ নেই। এলাকার মুরুব্বিদের সঙ্গে আলোচনা করে তিনি কালাম মিয়া, মোস্তফা কামাল ও মর্জিনা আক্তারের জামিন করান।
‘এখন ছেলেরা ও ছেলের বউই তার সেবাযত্ন এবং দেখাশোনা করবে। সেই সঙ্গে ভবিষ্যতে কোনো ধরনের খারাপ ব্যবহার করবে না।’
মামলার এজাহারে বলা হয়, আর্থিক অস্বচ্ছলতার কথা বলে চারিগ্রাম এলাকার আয়েশা বেগমকে ছেলেরা ও ছেলের স্ত্রীরা প্রায় ছয় মাস ধরে গোয়াল ঘরে গরুর সঙ্গে রেখেছিলেন। তারা ঠিকমতো খাবার দিতেন না। প্রতিবেশীরা খাবার দিলে তাদের সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করা হতো।
গত ৬ জুন স্থানীয়রা মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপারকে বিষয়টি জানায়। এরপর ১১ জুন ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করা হয়। সেই সঙ্গে আটক করা হয় দুই ছেলে ও এক ছেলের স্ত্রীকে।
সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুল ইসলাম মোল্যা জানান, ১২ জুন সকালে মা-বাবার ভরণপোষণ আইনে দুই ছেলে ও তাদের স্ত্রীর নামে মামলা করেন বৃদ্ধা। সোমবার দুপুরে তাদের আদালতে তোলা হয়।
ওই বৃদ্ধা একেবারে হাঁটাচলাও করতে পারেন না। মামলায় তার আরেক পুত্রবধূ বিলকিস আক্তারের নাম থাকলেও তাকে শাশুড়ির দেখাশোনা করার জন্য গ্রেপ্তার করা হয়নি।
আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এএসআই মো. জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আসামিদের আদালতে তোলার সময় আয়েশা বেগম উপস্থিত ছিলেন। তিনি বিচারকের কাছে জামিন আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক তাদের জামিন দিয়েছেন।’
ওই বৃদ্ধার শারীরিক অবস্থা স্বাভাবিক নয় বলে এ প্রসঙ্গে তার মন্তব্য নেয়া যায়নি।