চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপো থেকে আরও দেহাবশেষ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শেডের নিচে চাপা পড়া অবস্থায় সোমবার বেলা আড়াইটার দিকে ওই দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়।
নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ।
তিনি বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময় বেলা আড়াইটার দিকে শেডের নিচে চাপা পড়া অবস্থায় একটি দেহাবশেষ উদ্ধার করেছি। দেহাবশেষ বলতে পায়ের দিকের কিছু হাড়গোড়। একটি মরদেহ হিসেবে এটিকে গণনা করছি। এই হিসাবে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৪৯-এ।’
চট্টগ্রামের পার্কভিউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুরুল কাদের নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে রোববার দুপুরে। বিস্ফোরণে আহত হওয়ার পর থেকে তিনি ওই হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
এদিন ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক ফায়ার সার্ভিসকর্মীর মৃত্যু হয়। এই নিয়ে একটি আগুনের ঘটনায় সর্বোচ্চ ১০ জন ফায়ার সার্ভিসকর্মী প্রাণ হারালেন।
আগুনের পর বিস্ফোরণ
নেদারল্যান্ডস ও বাংলাদেশের যৌথ মালিকানাধীন (জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানি) প্রতিষ্ঠান বিএম কনটেইনার ডিপো সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকায়। সেখানে গত শনিবার রাত ৯টার দিকে আগুন লাগে।
একে একে ছুটে যায় চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিট। নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলা থেকেও পরে যোগ দেয় কয়েকটি ইউনিট। রোববার সকাল পর্যন্ত আগুন নেভাতে আসা ইউনিটের সংখ্যা বেড়ে হয় ২৫টি। কিন্তু কনটেইনারে থাকা রাসায়নিক পদার্থের কারণে দফায় দফায় বিস্ফোরণে বাড়ে আগুনের ভয়াবহতা।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, শনিবার রাত ৯টা ২৫ মিনিটে আগুন লাগার খবর পায় তারা। এরপর তাদের আটটি ইউনিট কাজ শুরু করে।
কিছু পরে ঘটনাস্থলে যোগ দেয় ফায়ার সার্ভিসের আরও সাতটি ইউনিট।
গত ৫ জুন চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক ও চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত আলাউদ্দিন তালুকদার জানান, নিহতদের মধ্যে ২৫ জনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। বাকিদের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
ডিসি মোহাম্মদ মমিনুর রহমান গত রোববার চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে জানান, আগুনের ঘটনায় আহত হয়েছেন ১৪৬ জন। তাদের চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ছাড়াও সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতাল ও বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘শ্রম মন্ত্রণালয় থেকে নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ২ লাখ টাকার চেক দেয়া হবে। আজ ১৩ জনের পরিবারকে এই টাকা বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন থেকে নিহতদের ৫০ হাজার ও আহতদের ২৫ হাজার টাকা দেয়া হচ্ছে।’
৮৭ ঘণ্টা পর ৮ জুন দুপুরে বিএম কনটেইনার ডিপোর আগুন নেভে। সাংবাদিকদের বুধবার দুপুর ১২টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের ১৮ ব্রিগেডের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফুল ইসলাম হিমেল।