ভারতের সঙ্গে তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়নে কাজ এগিয়েছে বলে জানিয়েছেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক।
সোমবার সচিবালয়ে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত ‘বিএসআরএফ সংলাপে’ এ তথ্য জানান তিনি। তিস্তা চুক্তির অগ্রগতি নিয়ে জাহিদ ফারুক বলেন, ‘তিস্তা চুক্তি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী, আমরা আগে চেষ্টা করেছিলাম। কাজটা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আছে। এটার স্টাডি হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমরা এগিয়ে গিয়েছি। কোন কোম্পানি কাজটা করবে সেই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পর্যালোচনা করছে।
‘পর্যালোচনার পর একটা দিকনির্দেশনা দিলে সেই বিষয়ে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে’।
২০১১ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরে তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে চুক্তি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির বিরোধিতায় আটকে যায় এই চুক্তি।
২০১৯ সালের অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরেও এই চুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়। সে সময় মোদি তার সরকারের ওই আমলে চুক্তি করার বিষয়ে আশ্বাস দেন। তবে সে কথা ফলেনি।
জাহিদ ফারুক বলেন, ‘দু বছর আগে আমি যখন হাঙ্গেরি গিয়েছিলাম তখন ভারতের জলশক্তি মন্ত্রীর সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল। আসার পর আমি তাকে কয়েকবার পত্র দিয়েছি। আমি তাকে বাংলাদেশে আসার জন্য দাওয়াত দিয়েছি। আমি বলেছি, আসেন আমরা আলোচনা করি। উনি হয়তো একটা সময় দেখে আসবেন।’
তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের এভাবে বলতে চাই, তিস্তাটা নিয়ে আমরা নিজেরাই উদ্বিগ্ন। এই চুক্তিটি আমরা করতে চাই। ধীরগতিতে হলেও কাজ আগাচ্ছে। আপনারা জানেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর কারণে কাজটি স্লো হয়ে গেছে। আমরা হয়তো অচিরেই তিস্তা নদীর পানি বণ্টনের ব্যাপারটি সমাধান করতে পারব।’
সুনামগঞ্জের জন্য দেড় হাজার কোটি টাকার প্রকল্প
আগামী বর্ষার আগে সুনামগঞ্জ এলাকার ১৪টি নদী খননের একটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে বলে জানান পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক।
তিনি বলেন, ‘প্রথম থেকেই সুনামগঞ্জের বিষয়ে আমার নজর রয়েছে। সেখানে আমরা ১ হাজার ৫৪৭ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নিয়েছি। সেখানে আমরা ১৪টা নদী খনন করব।
‘সমীক্ষা সেপ্টেম্বর মাসে চলে আসবে, অক্টোবরের মধ্যে চেষ্টা করব, একনেক থেকে সেটা পাস করিয়ে নেব। আগামী বর্ষা মৌসুমের আগেই আমরা কার্যক্রম শুরু করব। বর্ষার আগে আমরা যদি ২০ শতাংশ কাজও করতে পারি, আশা করি সুনামগঞ্জের হাওরের তেমন কোনো ক্ষতি আর হবে না।’
পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদারিতে ক্ষমতাসীনদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘প্রথমে ১১ জন ঠিকাদার ছিল। অনেক বড় বড় ঠিকাদার ছিল। এক-একজন ডিপিএমে (সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি) ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি টাকার কাজ পেত। আমরা একটি কাজও ডিপিএমে দিইনি।
‘আমরা বলেছি এই ১১ জন ঠিকাদার কাজ শেষ না করা পর্যন্ত নতুন করে কোনো কাজ পাবে না। কাজগুলো শেষ করার পর সেই পুরোনো ১১ জনকে এখন আমরা কাজ দিচ্ছি। এখন নির্দেশনা হচ্ছে একজন ঠিকাদার তিনটির বেশি কাজ করতে পারবে না। আমরা স্ট্রিক্ট ও সতর্ক আছি যে, একজন ঠিকাদারকে বেশি কাজ দেব না। বেশি কাজ দিলে দেরি হয়ে যায়।’