যাত্রী তোলা নিয়ে ফরিদপুরে বাস ও মাহিন্দ্রা শ্রমিকদের দ্বন্দ্বের জেরে জেলায় বাস চলাচল ৮ ঘণ্টা বন্ধের পর ফের চালু হয়েছে।
সোমবার বেলা ৩টা থেকে বাস চলাচল শুরু হয়। এর আগে সকাল ৭টায় জেলা থেকে সারা দেশে বাস চলাচল বন্ধ রাখে বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক সংগঠনগুলো।
তাদের এমন সিদ্ধান্তে যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। তাই বাস চালু রাখতে জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বাস মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে দুপুরে বৈঠকে বসেছেন। বৈঠকে কয়েকটি বিষয়ের শর্তে বাস চালুর সিদ্ধান্তে আসেন শ্রমিক নেতারা।
ডিসি অতুল সরকার বলেন, ‘যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে এবং শ্রমিকদের দ্বন্দ্ব মেটাতে পুলিশ প্রশাসনসহ শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়। সভায় উভয় পক্ষের সম্মতিতে বেলা ৩টা থেকে বাস চলাচলের সিদ্ধান্ত হয়।’
ফরিদপুর মোটর ওয়ার্কার্স শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জুবায়ের জাকির জানান, গত ৬ জুন বাস-মাহিন্দ্রা শ্রমিকদের দ্বন্দ্ব হয়। সেদিন প্রায় ৬ ঘণ্টা বাস চলাচল বন্ধ ছিল। পরে বিকেলে প্রশাসনের উপস্থিতিতে সভার সিদ্ধান্তে বাস চলাচল স্বাভাবিক হয়।
সিদ্ধান্ত হয় ১১ জুন বৈঠক করে মাহিন্দ্রা কোনো কোনো রুটে চলবে ও কোথা থেকে যাত্রী তুলবে তা নির্ধারণ করা হবে। কিন্তু ১১ জুন সে মিটিং না হওয়ায় আজ আবার বাস মালিক সমিতি ও মোটর ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়।
জুবায়ের জাকির আরও জানান, গত ৬ জুন সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বোয়ালমারী উপজেলার সতৈর এলাকায় মাহিন্দ্রাচালক মো. মজিদ তার পরিবহনে দুজন যাত্রী তোলেন। এ নিয়ে একই সড়কে চলাচল করা একটি বাসের হেলপার মো. রাসেলের মধ্যে হাতাহাতি হয়।
এর আধাঘণ্টা পর মাঝকান্দি এলাকায় মাহিন্দ্রাচালক মজিদ আরও লোকজন নিয়ে রাসেলকে লাঞ্ছিত করেন। রাসেল নতুন বাসস্ট্যান্ডে এসে অন্য শ্রমিকদের বিষয়টি জানালে সেদিন ১১টার দিকে সড়কে বাস রেখে বিক্ষোভ করেন তারা। এ ছাড়া এ সড়কে চলাচল করা ২৫ থেকে ৩০টি মাহিন্দ্রা আটকে রাখলে উত্তেজনা বিরাজ করে। এতে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়লে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।
পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের শান্ত করার চেষ্টা করে। একই সঙ্গে মধুখালীর মাঝকান্দি এলাকা থেকে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ অভিযুক্ত মাহিন্দ্রাচালককে আটক করে।
এ ঘটনার পর বাসস্ট্যান্ডের বাসমালিক গ্রুপের কার্যালয়ে মালিক, শ্রমিক ও ট্রাফিক পুলিশের উপস্থিতিতে জরুরি বৈঠক বসে। সেখানে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাসের ভিত্তিতে বিকেল ৪টার দিকে আবার সব ধরনের বাস চলাচল শুরু হয়।