কুড়িগ্রামের উলিপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমানের সুচিকিৎসার জন্য সংবাদ সম্মেলন করেছে তার পরিবার।
রোববার দুপুর আড়াইটার দিকে উলিপুরের জুম্মাহাট কেবলকৃষ্ণ গ্রামে নিজ বাড়িতে অনুষ্ঠিত ওই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে শোনান অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমানের স্ত্রী নুরজাহান বেগম।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, ডায়াবেটিস ও প্যারালাইসিসে আক্রান্ত মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমানকে ২০১৭ সালে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সে সময় তাকে সাধারণ বেডে রেখে নার্সের সহযোগিতা না নিয়ে সুইপার দিয়ে পায়ের ক্ষত পরিষ্কার করা হয়।
এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে মতিয়ার রহমানকে চিকিৎসক ধমক দিয়ে বলেন, ‘কিসের মুক্তিযোদ্ধা আপনি। চুপচাপ থাকেন।’
এ নিয়ে কথা কাটাকাটির জের ধরে চিকিৎসক তাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। সেখানে মুক্তিযোদ্ধা কেবিন না দিয়ে ৬ দিন মেঝে ও সাধারণ বেডে থাকার পর চিকিৎসক আসেন। ততক্ষণে পায়ে ইনফেকশন হওয়ায় ডান পায়ের বুড়ো আঙ্গুল কেটে ফেলতে হয়।
চিকিৎসার অভাবে বর্তমানে পা সহ শরীরের বিভিন্ন অংশে সংক্রমণ ও ক্ষত দেখা দিয়েছে মতিয়ার রহমানের। যতই দিন যাচ্ছে বেঁচে থাকার আশা ক্ষীণ হয়ে আসছে।
নিজের অবস্থার কথা জানিয়ে মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমান বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কাছে বার বার সহযোগিতা চেয়ে ব্যর্থ হয়েছি। সবাই দূর দূর করে তাড়িয়ে দিয়েছে। কেউ সম্মানটুকুও দেয়নি।’
তিনি জানান, একদিকে চিকিৎসা খরচ, অন্যদিকে ৫ সন্তান নিয়ে সংসার চালানো তার পক্ষে অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুচিকিৎসার জন্য তাই প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
মতিয়ার রহমানের ছোট ছেলে নাজমুল হাসান বলেন, ‘অনেকে সুবিধা পেলেও আমরা ৩ ভাই ও ২ বোনের কেউ সরকারি চাকরির সুবিধা পাইনি। মুক্তিযোদ্ধা ভাতার টাকায় কোনো রকমে চলছে আমাদের সংসার।’
স্ত্রী নুরজাহান বেগম বলেন, ‘আমার সব সন্তান বেকার। অর্থের অভাবে অনার্সে পড়া অবস্থায় ছোট ছেলের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। ছোট মেয়ে মার্জিয়া জান্নাত ডিগ্রি পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে পারেনি। আমার স্বামীর পেছনে সব অর্থ ব্যয় হওয়ায় সন্তানদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গেছে।’