মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপির দুই নেতার বিতর্কিত মন্তব্যের প্রতিবাদে আবার বিক্ষোভ করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা।
মহানবীকে অবমাননাকারীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে নিন্দা প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ থেকে রোববার শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। এটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে দিয়ে গিয়ে বাদ যোহর সাইন্স ফ্যাকাল্টি প্রদক্ষিণ করে। এরপর মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে বের হয়ে বাংলাবাজার মোড় হয়ে আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত চত্বরে এসে সমাবেশ করে শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা প্ল্যাকার্ড হাতে কটূক্তিকারীদের শাস্তির দাবি জানান।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘বিশ্বের যে কোনো জায়গায় যদি মহানবীকে অপমান করা হয়, কোনো মুসলিমকে আঘাত করা হয়, আমরা এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াব। মহানবীকে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করে বিজেপির দুই নেতা বিশ্বের কোটি কোটি মুসলমানের হৃদয়ে আঘাত করেছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার স্বার্থে ভারতের ইসলাম বিদ্বেষীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।’
বিক্ষোভ সমাবেশে ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী বেলাল চিশতি বলেন, ‘মহানবীকে নিয়ে কোনো কটূক্তি মেনে নেব না। বিশ্বের মুসলিম সমাজ এক হয়ে আমরা এই কটূক্তিকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জাফর সিহাব বলেন, ‘বাংলাদেশের অধিকাংশ জনগণ মুসলিম। জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রীয়ভাবে এ নিয়ে নিন্দা প্রকাশ করা উচিত।’
এদিকে বিজেপির দুই নেতার কটূক্তিপূর্ণ বক্তব্যের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরাও।
সম্প্রতি জ্ঞানবাপী মসজিদ নিয়ে ভারতের একটি টেলিভিশন চ্যানেলের অনুষ্ঠানে নূপুর মহানবীকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন।
ইসলাম সম্পর্কেও তার কিছু মন্তব্যের জেরে দেশটিতে মুসলিম সমাজে ক্ষোভ দানা বাঁধছিল। বিভিন্ন রাজ্যে এরই মধ্যে নূপুরের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
শুধু নূপুরই নন, মহানবীকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন বিজেপি নেতা নবীন কুমার জিন্দালও।
শুক্রবার ভারতের ঝাড়খণ্ডে প্রতিবাদ সমাবেশে সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন। অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
এ ইস্যুতে পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করায় বিজেপির পক্ষ থেকে নূপুর ও নবীনকে ছয় বছরের জন্য বরখাস্ত করা হয়েছে।
মহানবীকে নিয়ে বিজেপির দুই নেতার বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে দলটি। অন্তত ১৫টি দেশ এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে। ব্যাপক প্রতিক্রিয়া এসেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে। এসব দেশে ভারতের বিরুদ্ধে বিক্ষোভও হয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কিছু সংবাদমাধ্যম এবং পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, সেসব দেশে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ঘোষণাও দিয়েছে মুসলমানরা।
এ ঘটনার পর দলের নেতা ও মুখপাত্রদের টিভি বিতর্কে অংশ নেয়ার ব্যাপারে নতুন নিয়ম করেছে বিজেপি। এখন থেকে কেবল দলটির অনুমোদিত মুখপাত্র এবং প্যানেলিস্টরা টেলিভিশন বিতর্কে অংশ নিতে পারবেন। টিভি বিতর্কে অংশ নিতে মুখপাত্র এবং প্যানেলিস্ট নির্ধারণ করে দেবে দলটির মিডিয়া সেল।