বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

স্বল্পমূল্যে ইট বিক্রির নামে ৪ কোটি টাকা ‘আত্মসাৎ’

  •    
  • ১২ জুন, ২০২২ ১৬:৫৭

‘২০১৮ সাল থেকে রিপন ব্রিকস প্রতি বছর স্বল্পমূল্যে ইট বিক্রির কথা বলে বিভিন্ন ধাপে নামে শতাধিক মানুষের কাছ থেকে ৪ কোটি টাকা সংগ্রহ করেন। মূলত স্বল্পমূল্যে ইট বিক্রির নামে তারা প্রতারণার ফাঁদ পাতেন। এই প্রতারণার মূল হোতা রিপন ব্রিকসের স্বত্বাধিকারী আবু বক্কর ছিদ্দিক।’

যশোরের কেশবপুরে স্বল্পমূলে ইট দেয়ার নামে গ্রাহকের ৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ভাটার মালিকের বিরুদ্ধে।

ওই ইটভাটার নাম রিপন ব্রিকস। এটি উপজেলার সাতবাড়িয়া ইউনিয়নে অবস্থিত।

যশোর প্রেস ক্লাবে রোববার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।

সংবাদ সম্মেলনে তৌহিদুর রহমান বলেন, ‘২০১৮ সাল থেকে রিপন ব্রিকস প্রতি বছর স্বল্পমূল্যে ইট বিক্রির কথা বলে বিভিন্ন ধাপে নামে শতাধিক মানুষের কাছ থেকে ৪ কোটি টাকা সংগ্রহ করেন। মূলত স্বল্পমূল্যে ইট বিক্রির নামে তারা প্রতারণার ফাঁদ পাতেন। এই প্রতারণার মূল হোতা রিপন ব্রিকসের স্বত্বাধিকারী আবু বক্কর ছিদ্দিক।

‘তার কাছে ভুক্তভোগীরা ইট বা টাকা ফেরত চাইতে গেলে তার স্থানীয় ক্যাডার দিয়ে হুমকি ও মামলা দেয়ার ভয় দেখান। বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, পুলিশ ফাঁড়ি বা থানায় লিখিত অভিযোগ দিলেও ভাটা মালিকরা প্রভাবশালী হওয়ায় ভুক্তভোগীরা কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না।’

তৌহিদুর বলেন, ‘২০১৮ সাল থেকে রিপন ব্রিকস স্বল্পমূল্যে ইট বিক্রির নামে ফাঁদ পাতেন এবং একটি চক্র গড়ে তোলেন। চক্রটির কাজ হলো স্থানীয় প্রবাসী, চাকরি ও দিনমজুরিদের কাছে গিয়ে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ইট নেয়ার আগ্রহ সৃষ্টি করা। এমনকি চক্রের সদস্য পারভেজ, কামরুজ্জামান শিশু, মোশারফ গাজীসহ ৫-৬ জনকে এজেন্ট নিয়োগ দিয়ে তাদের দিয়ে চাপ সৃষ্টি করে ভয় দেখিয়ে ইট কিনতে রাজি করায়।

‘তাদের কথা মতো ভাটার ম্যানেজারের কাছে দুই দফায় সাড়ে চার লাখ টাকা আমি জমা দেই। আমাদের রশিদও দেয়া হয়। মৌসুমে আমরা ইট সংগ্রহ করতে গেলে বলে, ‘ইট পোড়ানো হয়নি, ইট প্রস্তুত হলে দেয়া হবে। অথচ মৌসুমে বাইরে বিভিন্ন ক্রেতার কাছে তারা ঠিকই ইট বিক্রি করেছেন। বিষয়টি আমরা জেনে ভাটার মালিক আবু বক্কর ছিদ্দিকের কাছে গেলে তিনি টালবাহানা শুরু করেন। বিদেশ থেকে দেশে এসে নিজের সঞ্চয় করা এতগুলো টাকা আত্মসাৎ করে নেয়ায় আমি অসহায়ভাবে জীবনযাপন করছি। আমার মতো অনেকেই এই ইটভাটার প্রতারণার শিকার।’

স্থানীয় এক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘মাস্টারি করে অল্প অল্প করে টাকা সঞ্চয় করে বাড়ি নির্মাণের জন্য টাকা জমিয়ে ছিলাম। স্থানীয় রিপন ব্রিকসের কাছে ৫ লক্ষাধিক টাকা জমা দেই। ইটও দেয়নি, টাকাও দেয়নি। টাকা চাইতে গেলে বলে সামনের বছরে দেব। এমন করে তিন বছর ঘুরালেও তারা আমার টাকা বা ইট কোনোটাই দিচ্ছে না।’

সাতবাড়িয়ার পাঁচানি এলাকার ভুক্তভোগী আব্দুস সোবহান জানান, ‘ইট দেয়ার জন্য আমার কাছ থেকে তার এজেন্টরা তিন লাখ ৪০ হাজার টাকা নিয়েছে। এখন ইট দিচ্ছে না; টাকাও দিচ্ছে না। টাকা চাইতে গেলে তার ছেলের সন্ত্রাসীবাহিনী ও পুলিশ দিয়ে মামলা দেয়ার ভয়ভীতি দেখান। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করছি আমাদের টাকাগুলো ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিক।’

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘আমরা কারোও সঙ্গে প্রতারণা করছি না। ভুক্তভোগীদের হুমকিও দিচ্ছি না। বর্তমানে ইটভাটা বন্ধ রয়েছে। সবার ইট দেয়া হবে।’

কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম এম আরাফাত হোসেন বলেন, ‘রিপন ব্রিকসের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। আমরা ইটাভাটা মালিককে নোটিশ করেছি। ভুক্তভোগীদের অভিযোগের পরিপেক্ষিতে আমাদের তদন্ত চলমান রয়েছে। সত্যতা মিললে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।’

কেশবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বোরহান উদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রিপন ব্রিকসের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থানায় আসেনি। বিষয়টি আমার জানা নেই।’

টাকা উদ্ধারের বিষয়ে ওসি বলেন, ‘কারও সুদের টাকা তুলে দেয়া পুলিশের কাজ না। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে ভুক্তভোগীরা মামলা করুক। আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।’

এ বিভাগের আরো খবর