বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কুড়িগ্রামে পাহাড়ি ঢলে ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি

  •    
  • ১১ জুন, ২০২২ ২১:৫৯

‘অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে উপজলার ১০৭ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে আউশ ধান ৪৮ হেক্টর, পাট ৪২, শাকসবজি ১২ হেক্টর ও ৫ হেক্টর তিল তলিয়ে গেছে। এ পানি ৫ দিন স্থায়ী হলে ফসল নষ্ট হয়ে যাবার আশঙ্কা রয়েছে।’

কুড়িগ্রামে টানা বৃষ্টি আর ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে জেলার রৌমারী উপজেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন ৩২ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ।

পানিতে তলিয়ে গেছে ১০৭ হেক্টর জমির ধান,পাট ও শাকসবজি। রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।

পানিবন্দি এসব মানুষের যোগাযোগের একমাত্র ভরসা নৌকা ও কলাগাছের তৈরি ভেলা। উপজেলার ২১টি বিদ্যালয় পানি ওঠায় ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান।

উপজেলার জিঞ্জিরাম নদী দিয়ে ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের লাল পানির কারণে চার ইউনিয়নের ৩২ গ্রামের প্রায় ২০হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে যাদুরচর ইউনিয়নের পুরাতন যাদুরচর, কাশিয়াবাড়ী, লালকুড়া, বিক্রিবিল, চর লাঠিয়ালডাঙ্গা, বালিয়ামারী, শ্রীফলগাতি, খেওয়ারচর, বকবান্দা, আলগারচর, পাহাড়তলী, যাদুরচর পূর্বপাড়া, তিনঘড়িপাড়া, বকবান্ধা।

রৌমারী সদর ইউনিয়নের বাওয়াইরগ্রাম, ঝাউবাড়ি, দুবলাবাড়ী, রতনপুর,কলাবাড়ি, বড়াইবাড়ি, চুলিয়ারচর, উত্তর বারবান্দা, ইজলামারী, ফুলবাড়ি, ভুন্দুরচর, নয়ারচর, গায়ালগ্রাম, চাদারচর, খাটিয়ামারী, মাদারটিলা, পূর্বইজলামারী, কড়াইকাদি ও ঠনঠনিপাড়া, পশ্চিম মাদার টিলা, নতুন চুলিয়ারচর।

শৌলমারী ইউনিয়নের গয়টাপাড়া, বেহুলারচর, চরবোয়ালমারী এবং দাঁতভাঙা ইউনিয়নের পূর্ব কাউয়ারচর, বাঘেরহাট এলাকার ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

কাশিয়াবাড়ি গ্রামের কৃষক আকবর আলী বলেন, ‘এবার আড়াই বিঘা জমিতে ধান চাষ করছি। এর মধ্যে দেড় বিঘা জমির ধান কাটতে পারলও ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে এক বিঘা জমির ধান তলিয়ে গেছে। এতে ২১ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।’

পুরাতন যাদুরচর এলাকার কৃষক হাজী আব্দুস সামাদ বলেন, ‘পাহাড়ি ঢল নামায় এলাকার সব রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। এখন নৌকা আর ভেলা ছাড়া বাড়ি থেকে বের হবার উপায় নেই। ছেলে-মেয়েরা স্কুল যেতে পারছে না।’

লালকুড়া গ্রামের কৃষক আবু সাঈদ বলেন, ‘হঠাৎ বানের পানি আইসা জমিতে রাখা সব পোয়াল (খড়) ভাসাইয়া নিয়া গেছে। এখন গরুর খাওয়ামো কী, এ চিন্তায় আছি।’

যাদুরচর ইউনিয়নর পুরাতন যাদুরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোনালিসা বলেন, ‘বিদ্যালয় ও বাড়ির চারপাশে পানি ওঠায় নিয়মিত স্কুল যেতে পারছি না। এতে পড়াশুনার খুব ক্ষতি হচ্ছে।’

যাদুরচর ইউপি চেয়ারম্যান সরবেশ আলী বলেন, ‘বন্যার পানিতে যাদুরচর ইউনিয়নের প্রায় ১২ গ্রামের ১৭ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। শনিবার ১১ জুন রৌমারী ইউএনও স্যারকে সরেজমিন বন্যাকবলিত এলাকাগুলা ঘুরে দেখানো হয়েছে।’

উপজলা কৃষি কর্মকর্তা কাউয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে উপজলার ১০৭ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে আউশ ধান ৪৮ হেক্টর, পাট ৪২, শাকসবজি ১২ হেক্টর ও ৫ হেক্টর তিল তলিয়ে গেছে। এ পানি ৫ দিন স্থায়ী হলে ফসল নষ্ট হয়ে যাবার আশঙ্কা রয়েছে।’

রৌমারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘উপজেলার ২১টি বিদ্যালয় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে ১৩টি বিদ্যালয় যাদুরচর ইউনিয়নের।’

রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, ‘সরেজমিনে পরিদর্শন করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে ত্রাণ সহায়তার জন্য জেলা প্রশাসককে জানানো হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর