রাজধানীর বাংলামোটরে বাসচাপা দিয়ে পুলিশের কনস্টেবল কোরবান আলীকে হত্যার পর পালিয়ে যান চালক। তিনি সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে যেতে চেয়েছিলেন। এ ছাড়া ওই বাসটির কোনো রুট পারমিটও ছিল না।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর থেকে শুক্রবার এই বাসের চালক মো. জাকির হোসেন এবং ঢাকার সাভার থেকে মালিক মো. আলম ওরফে খোকাকে গ্রেপ্তার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান (র্যাব)।
শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য জানান র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
র্যাব জানায়, গোপন তথ্যে র্যাব-২-এর অভিযানে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে জাকির জানান, গত মের মাঝামাঝি থেকে ওয়েলকাম ট্রান্সপোর্টের এই বাসটি চালানো শুরু করেন তিনি।
ঘটনার দিন জাকির সাভারের জিরানি বাজার থেকে আরামবাগের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। পথে কারওয়ান বাজার সিগন্যাল থেকে যাত্রী নিয়ে আরও বেশি যাত্রী নেয়ার জন্য বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালাতে থাকেন তিনি।
একপর্যায়ে সামনে থাকা মোটরসাইকেল আরোহীকে চাপা দিয়ে দ্রুতগতিতে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন চালক জাকির। পরে বাংলামোটরে গাড়ি রেখে পালিয়ে যান।
র্যাব আরও জানায়, সাধারণ মানুষ চালককে আটক করতে গেলে চালক জাকির দৌড়ে পার্শ্ববর্তী একটি স্থানে লুকিয়ে থেকে কিছুক্ষণ পর আরেকটি বাসে ফার্মগেট চলে আসেন।
বাসে উঠে তিনি মোবাইল থেকে তার হেলপারকে কল দিলে হেলপার জানান, বাসের নিচে চাপা পড়া ব্যক্তি সম্ভবত মারা গেছেন।
সারা দিন ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে ঘোরাঘুরি করে রাতে বাসে চট্টগ্রামে যান জাকির। এরপর চট্টগ্রাম থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আত্মগোপন করেন তিনি। জাকিরের পরিকল্পনা ছিল সীমান্ত পেরিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে অবৈধভাবে পালিয়ে যাওয়া।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, বাসমালিক মো. আলম জিজ্ঞাসাবাদে জানান, ২০১৭ সালে পরিবহন ব্যবসা শুরু করেন। প্রথমে ঋণ নিয়ে একটি বাস কিনে জিরানি থেকে মতিঝিল রুটে দেন। এরপর ২০২০ সালে আরেকটি বাস রুট পারমিট ছাড়াই অবৈধভাবে রাস্তায় ছাড়েন। পরবর্তী সময়ে রুট পারমিটের জন্য আবেদন করেন, কিন্তু এখনো পারমিট পাননি।
র্যাব জানায়, পারমিট না থাকা সত্ত্বেও দুই বছর ধরে গাড়িটি রাস্তায় চলাচল করছিল। দুর্ঘটনার পর তিনি তার স্টাফের কাছে জানতে পারেন তার নামে মামলা হয়েছে। এরপর গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি সাভারে আত্মগোপনে চলে যান।
গত ৬ জুন মোটরসাইকেলে রাজারবাগ পুলিশ লাইনে ডিউটিতে যাওয়ার পথে ওয়েলকাম ট্রান্সপোর্টের বাসের চাপায় প্রাণ হারান পুলিশের কনস্টেবল কোরবান আলী। তিনি রাজারবাগ পুলিশ টেলিকমে কর্মরত ছিলেন। ২০০৫ সালে বাংলাদেশ পুলিশে যোগ দেন কোরবান।