চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কন্টেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণে আহত হয়ে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ১৬৩ জনের মধ্যে ৯৬ জন বাসায় ফিরেছেন।
শুক্রবার রাত পর্যন্ত এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ৫৩ জন।
নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান।
তিনি বলেন, ‘সীতাকুণ্ডে কন্টেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের পর রোববার পর্যন্ত চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন ১৬৩ জন। এর মধ্যে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে ১২ জনকে। আইসিইউ সংকট থাকায় জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে আরেও দুজনকে।
‘এখন চমেক হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৫৩ জন। এদের মধ্যে আইসিইউতে কেউ নেই। সবার অবস্থা মোটামুটি ভালো, আশংকামুক্ত। এখন পর্যন্ত ৯৬ জন বাসায় ফিরেছেন। যাদের শারীরিক অবস্থা ভালো, তাদের ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। তাদের ফলোআপ চিকিৎসায় রাখা হয়েছে।’
সোমবার চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধদের দেখতে গিয়ে কিছু রোগীকে বাসায় পাঠিয়ে দেয়ার কথা বলেছেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন।
এর পর থেকে এক এক করে হাসপাতাল ছাড়তে শুরু করেন তুলনামূলক কম আহত রোগীরা। প্রথম দিন হাসপাতাল ছাড়ে বাসায় ফেরেন ৫৮ জন । শুক্রবার পর্যন্ত হাসপাতাল ছাড়েন আরও ৩৮ জন।
নেদারল্যান্ডস ও বাংলাদেশের যৌথ মালিকানার (জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানি) প্রতিষ্ঠান বিএম কনটেইনার ডিপো সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকায়। সেখানে গত শনিবার রাত ৯টার দিকে আগুন লাগে। কনটেইনারে থাকা রাসায়নিক পদার্থের কারণে দফায় দফায় বিস্ফোরণে বাড়ে আগুনের ভয়াবহতা।
৮৭ ঘণ্টা পর বুধবার দুপুরে ডিপোর আগুন নেভে। বিস্ফোরণের ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে সীতাকুণ্ড থানায় মামলা করেছেন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আশরাফ সিদ্দিকী।
সীতাকুণ্ড থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ জানান, দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে ডিপোর আট কর্মকর্তা-কর্মচারীকে মামলার আসামি করা হয়েছে। আসামিরা হলেন, বিএম কনটেইনার ডিপোর মহাব্যবস্থাপক নাজমুল আক্তার খান, উপমহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) নুরুল আক্তার খান, ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) খালেদুর রহমান, সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্বাস উল্লাহ, জ্যেষ্ঠ নির্বাহী (প্রশাসন) নাছির উদ্দিন, সহকারী ব্যবস্থাপক আবদুল আজিজ, ডিপোর শেডের ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম ও সহকারী ডিপো ইনচার্জ নজরুল ইসলাম।
আগুনে দগ্ধ হয়ে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হন দুই শতাধিক। নিহতদের মধ্যে ৯ জন ফায়ার সার্ভিস সদস্য রয়েছেন।
নিহতদের মধ্যে পরিচয় শনাক্ত হয়েছে ২৭ জনের। তাদের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চমেক হাসপাতালের পরিচালক।