প্রেমের সম্পর্ক মেনে না নেয়ায় একসঙ্গে বিষপানে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয় দুজন। তিন দিন পর শুক্রবার দুপুরে ১৪ বছর বয়সী প্রেমিকা জান্নাতুল ফেরদৌস মিমের মৃত্যু হয়েছে। আর ১৫ বছরের প্রেমিক টগর সুস্থ হয়ে যাওয়ায় তাকে ছাড়পত্র দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বিষপান করা দুজনই যশোরের চৌগাছা উপজেলার জগদীশপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং জগদীশপুর-মির্জাপুর ইসমাইল হোসেন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
মৃত জান্নাতুল ফেরসৌস মিম জগদীশপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেনের মেয়ে এবং টগর একই গ্রামের আক্তার আলীর ছেলে।
জানা যায়, উভয়ের পরিবার প্রেমের সম্পর্ক মেনে না নেয়ায় একসঙ্গে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয় টগর ও মিম। সংগ্রহ করে আগাছানাশক বিষ। পরে বুধবার সকাল ১০টায় পরীক্ষা শুরুর মুহূর্তে ওই আগাছানাশক নিয়ে স্কুলের মূল ভবনের পেছনে যায় দুজন।
সেখানে মিমের হাতে আগাছানাশক তুলে দেয় টগর। মিম এর কিছু অংশ পান করে বাকিটা টগরের হাতে দেয়। পরে টগর বাকিটুকু পান করে।
কিছুক্ষণ পর মিম-টগর দুজনই পরীক্ষার হলে গিয়ে বসে। প্রায় আধা ঘণ্টা পর পরীক্ষার হলেই অসুস্থ হয়ে যায় মিম। প্রশ্নের মুখে শিক্ষকদের কাছে দুজনের বিষপানের কথা স্বীকার করে সে। তবে টগর এ সময় বিষপানের কথা অস্বীকার করে শিক্ষকদের কাছে জানায়, শুধু মিম বিষপান করেছে। এ অবস্থায় পুরো পরীক্ষা দেয় টগর।
এদিকে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা মিমকে উদ্ধার করে চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লেক্সে নিলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে মিমের মা সাংবাদিকদের জানান, ‘তার মেয়েকে বিষ খাইয়ে দিয়ে টগর পালিয়ে যায়।’
এ নিয়ে পরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রেমিকাকে বিষপান করিয়ে প্রেমিকের পালিয়ে যাওয়ার খবর প্রকাশিত হয়।
যশোরে মিমের অবস্থার অবনতি হলে বৃহস্পতিবার তাকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
অন্যদিকে পরীক্ষা শেষে বাড়িতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে যায় টগর। পরিবারের সদস্যরা তাকে চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। তাকেও প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে স্থানান্তর করেন চিকিৎসকরা। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার তাকেও খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
শুক্রবার দুপুরে মিমের মৃত্যু হলেও আশঙ্কামুক্ত হওয়ায় টগরকে ছাড়পত্র দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে গ্রামের বাড়িতে চিকিৎসাধীন সে।
চৌগাছা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম সবুজ জানান, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।