ট্রেন না থামানোয় সহকারী চালককে মারধরের ঘটনায় রেলওয়ের পাঁচ শ্রমিককে বরখাস্তের প্রতিবাদে লাইন অবরোধ করে মানববন্ধন হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন থেকে কিছু দূরে লাল পতাকা টাঙিয়ে শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত মানববন্ধন করেন শ্রমিকরা।
এতে চুয়াডাঙ্গার দর্শনার আন্তর্জাতিক রেলস্টেশনে ভারত থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী মৈত্রী এক্সপ্রেসকে এবং খুলনা থেকে ছেড়ে আসা চিত্রা এক্সপ্রেসকে দর্শনা স্টেশনে বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে তারা আন্দোলন থেকে সরে গেলে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
আন্দোলনরত শ্রমিকদের বরাতে চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে শ্রমিক লীগের সভাপতি আব্দুল গফুর বলেন, ‘আলমডাঙ্গায় ট্রেনের সহকারী চালককে মারধরের ঘটনায় পাঁচজন শ্রমিককে বরখাস্ত করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। তারই প্রতিবাদে আজ সকাল থেকে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে রেলওয়ে শ্রমিকরা।
‘দুপুরে রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশ্বাসে আজকের মতো কর্মসূচি থেকে তারা সরে এসেছে। ওই পাঁচ শ্রমিককে কাজে বহাল না করলে শ্রমিকরা আবার কর্মসূচি দেবে।’
বরখাস্ত শ্রমিক হুমায়ুন কবীর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অন্যায়ভাবে আমাকেসহ পাঁচ শ্রমিককে বরখাস্ত করা হয়েছে। অবিলম্বে আমাদের কাজে বহাল করা হোক। এ ছাড়া আমাদের ঝুঁকি ভাতা ও ছয় মাস ধরে বন্ধ থাকা পোশাক ধোলাই ভাতা চালু, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি অনুযায়ী বেতনভাতা বৃদ্ধি এবং নেশাগ্রস্ত ও চলন্ত ট্রেনে ঘুমিয়ে পড়া চালকদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
‘বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের জিএম অসীম কুমার তালুকদারের আশ্বাসে আমরা আজ কর্মসূচি থেকে সরে দাঁড়িয়েছি। অবিলম্বে আমাদের দাবি মানা না হলে বৃহত্তর কর্মসূচি দেয়া হবে।’
চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশন মাস্টার মিজানুর রহমান জানান, শ্রমিকরা লাইন অবরোধ করে মানববন্ধন করায় দুটি ট্রেন আটকা পড়েছিল। পরে তারা সরে যাওয়ায় ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
আলমডাঙ্গার লাল ব্রিজের ওপর বৃহস্পতিবার বিকেলে লাইনের মেরামতকাজ চলার সময় মালবাহী ট্রেনকে থামার জন্য সিগন্যাল দেন শ্রমিকরা। তা না মেনে ট্রেনটি চলতে থাকলে শ্রমিকরা আতঙ্কে ছোটাছুটি করেন, কেউ ঝাঁপ দেন পানিতে।
কিছুক্ষণ পর ট্রেন থামলে ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ট্রেনের সহকারী চালক জুনায়েদুর রহমানকে মারধর করেন। মারধরের প্রতিবাদে ট্রেনটি কিছুক্ষণ বন্ধ রাখা হয়।
রেলওয়ের পাকশী বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা চালক ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে বিচারের আশ্বাস দিলে রাত ৯টার দিকে মালবাহী ট্রেনটি সিরাজগঞ্জের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
এ ঘটনায় রেল কর্তৃপক্ষ পাঁচ শ্রমিককে বরখাস্ত করে। সেই সঙ্গে রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় সংকেত ও টেলিযোগাযোগ প্রকৌশলী এম এম রাজিব বিল্লাহকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়। তিন কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।