বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সুন্দরবনে প্রবেশ নিষেধ, ২৩ হাজার পরিবার বিপাকে

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ৯ জুন, ২০২২ ১৯:৪১

নীলডুমুর ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হালিম বলেন, ‘তিন মাস সুন্দরবনে প্রবেশ নিষেধ। জেলে, বাওয়ালি, পর্যটক কেউই সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারছে না। জেলে বাওয়ালিদের পাশাপাশি ট্রলার মালিক ও শ্রমিকদেরও দুর্দিন চলছে। কারণ এখানকার ট্রলারগুলো শুধুই পর্যটকদের জন্য।’

জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে সুন্দরবনে ভ্রমণ ও মাছ শিকারে বন বিভাগের টানা তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা চলছে। এতে কর্মহীন হয়ে পড়েছে সাতক্ষীরা উপকূলের ২৩ হাজার পরিবার। মানবেতর জীবনযাপন করছে তারা।

২০১৯ সাল থেকে প্রতি বছর জুলাই থেকে আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনের নদী ও খালে মাছ আহরণ বন্ধ রাখে বন বিভাগ। এ বছর ১ জুন থেকে এই নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়। এতে বিপাকে পড়েছেন জেলে-বাওয়ালিসহ সুন্দরবনকেন্দ্রিক পর্যটনে জড়িতরা।

শ্যামনগরের বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের দাতিনাখালী গ্রামের সিদ্দিক গাজী বলেন, ‘সুন্দরবনের পাস বন্ধ। ডাঙায়ও কাজ নেই। বেকার বসে আছি। সংসার চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে। শিশুদের ওষুধও কিনতে পারছি না।’

গাবুরা ইউনিয়নের সোরা গ্রামের বাওয়ালি ইউনুচ শেখ বলেন, ‘আমরা বাপ-দাদার আমল থেকে বন করে খাই। পাস পারমিট বন্ধ করে দেয়ায় খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছি। সরকারি সুযোগ-সুবিধাও পাচ্ছি না।’

নীলডুমুর ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হালিম বলেন, ‘তিন মাস সুন্দরবনে প্রবেশ নিষেধ। জেলে, বাওয়ালি, পর্যটক কেউই সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারছে না। জেলে বাওয়ালিদের পাশাপাশি ট্রলার মালিক ও শ্রমিকদেরও দুর্দিন চলছে। কারণ এখানকার ট্রলারগুলো শুধু পর্যটকদের জন্য।’

জেলে-বাওয়ালিসহ পর্যটনসংশ্লিষ্টদের সরকারি সহায়তা দেয়ার দাবি জানান তিনি।

এসব পরিবারের সদস্যরা সুন্দরবন, নদী ও সাগরে মাছ, কাঁকড়া ও বনজ সম্পদ আহরণ এবং পর্যটক গাইড হিসেবে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।

পশ্চিম সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জ সূত্রে জানা গেছে, সুন্দরবনের জলভাগে ২১০ প্রজাতির সাদা মাছ, ২৪ প্রজাতির চিংড়ি, ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া, ৪৩ প্রজাতির মালাস্কা ও এক প্রজাতির লবস্টার রয়েছে। জুন থেকে আগস্ট এই তিন মাস মাছের প্রজনন মৌসুমে সুন্দরবনের নদী-খালে মাছের ডিম থেকে জন্ম নেয় পোনা।

এ বছর ১ জুন থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের পর এখনও বনজীবী পরিবারগুলোর কাছে পৌঁছায়নি সরকারি সহায়তা।

শ্যামনগর উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা তুষার মজুমদার বলেন, ‘উপজেলায় নিবন্ধন করা ২৩ হাজার মৎস্যজীবী রয়েছেন। এর মধ্যে কেউ খাল-বিলে, কেউ নদীতে আবার কেউ কেউ সাগরে মাছ ধরেন। এদের মধ্যে সমুদ্রে মৎস্য আহরণকারী ৭৯৫টি পরিবার দু-এক দিনের মধ্যেই ৫৬ কেজি করে চাল পাবে। ডিও হয়ে গেছে।

‘৮ হাজার ৩২৪টি পরিবারের তালিকা পাঠানো হয়েছে। তারা ২০ জুলাইয়ের মধ্যে ৩০ কেজি করে চাল পেতে পারেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘মৎস্য প্রজনন মৌসুমে নিষেধাজ্ঞার মধ্যে আমরা শুধু সাগরে মাছ আহরণকারীদের জন্য সহায়তা দিয়ে থাকি। সুন্দরবনের ‌ওপর নির্ভরশীল পরিবারগুলোর কথা বন বিভাগ বলতে পারবে।’

পশ্চিম সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক এম এ হাসান বলেন, ‘সাতক্ষীরা রেঞ্জে পর্যটক গাইডসহ ৯ থেকে সাড়ে ৯ হাজার মানুষ সুন্দরবনের বনজ সম্পদ আহরণের সঙ্গে জড়িত।

‘তাদের সরকারিভাবে সহায়তার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে। এখনও নির্দেশনা আসেনি।’

এ বিভাগের আরো খবর