বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘কর্মকর্তারা দেখে যায়, কাজ হয় না’

  •    
  • ৯ জুন, ২০২২ ১৬:০২

যশোর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফ উজ জামান বলেন, ‘শার্শা ও ঝিকরগাছা ইউএনওর চিঠি পেয়েছি। এ বিষয়ে হাইকোর্টে রিট আছে। আমরা আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেছি। হাইকোর্টে মামলার রায়ের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করছি। রায় পেলেই সিদ্ধান্ত জানানো যাবে।’

যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের দুই ধারে মরা শতবর্ষী ও ঝুঁকিপূর্ণ গাছগুলো জরুরি ভিত্তিতে অপসারণের অনুরোধ করেছেন শার্শা ও ঝিকরগাছা উপজেলা প্রশাসন।

তবে হাইকোর্টে এ-সংক্রান্ত রিটের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সমাধান মিলছে না বলে জানা গেছে।

সম্প্রতি শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নারায়ণ চন্দ্র পাল ও ঝিকরগাছা ইউএনও মো. মাহবুবুল হক আইনি প্রক্রিয়ায় গাছগুলো অপসারণের অনুরোধ জানিয়ে যশোর জেলা প্রশাসককে আলাদা দুটি চিঠি পাঠিয়েছেন।

ইউএনও নারায়ণ চন্দ পাল বলেন, ‘যশোর-বেনাপোল মহাসড়কে ঝুঁকিপূর্ণ বেশ কয়েকটি মরা গাছ রয়েছে। এগুলো অপসারণের জন্য উপজেলা প্রশাসনের কাছে নিয়মিত ফোন আসে। কিন্তু সড়কটি হাইওয়ে যশোর বিভাগের ও গাছগুলো জেলা পরিষদের হওয়ায় এখানে উপজেলা প্রশাসনের করণীয় কিছু নেই।

‘এরপর জনগণের অভিযোগের ভিত্তিতে জনস্বার্থে জেলা পরিষদের কাছে ঝুঁকিপূর্ণ ডাল ও মরা গাছ অপসারণের জন্য আবেদন করেছি।’

চিঠিতে বলা হয়েছে, যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের দুই পাশে শতবর্ষী বেশ কিছু মরা রেইনট্রি রয়েছে। এশিয়ান হাইওয়ে নামে ওই মহাসড়ক দিয়ে দেশের সর্ববৃহৎ বেনাপোল স্থলবন্দর থেকে প্রতিদিন কয়েক হাজার পণ্যবাহী ট্রাক ও দূরপাল্লার বাস চলাচল করে।

এ ছাড়া আম্পানসহ ঘূর্ণিঝড়ে বেশ কয়েকটি গাছ মহাসড়কের পাশে উপড়ে পড়ে আছে। বিভিন্ন সময় উপড়ে পড়া এসব গাছ আজও অপসারণ করা হয়নি। একই সঙ্গে ঝিকরগাছা উপজেলা মোড়, বাসস্ট্যান্ড এলাকা, হাজিরালির মোড়, বেনেয়ালির বাজার, গদখালি বাজার, নবীনগর, চারাতলা, কলাগাছি, নাভারন পুরাতন বাজার, নাভারন সাতক্ষীরা মোড়, নাভারন নিউ মার্কেট এলাকা ও শার্শা বাজারের মতো জনসমাগমপূর্ণ এলাকায় মরা গাছগুলো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করা যান ও যাত্রীসহ এলাকার মানুষরা আতঙ্কে রয়েছেন। তাই জরুরি ভিত্তিতে গাছগুলো অপসারণ না করলে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

এদিকে ঝিকরগাছা ইউএনও মাহবুবুল হক বলেন, ‘মহাসড়কের পাশে মরা গাছ ও ডাল ভেঙে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই মানুষের নিরাপত্তার কথা ভেবে গাছগুলো অপসারণের অনুরোধ করেছি।’

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘সেবা’র সভাপতি আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘ঝিকরগাছা বাসস্ট্যান্ডে যাত্রীরা বাসের জন্য শুকিয়ে যাওয়া গাছের নিচে দাঁড়িয়ে থাকেন। এসব গাছের ডাল পোকা খেয়ে ফেলেছে। যেকোনো মুহূর্তে ডাল বা গাছ ভেঙে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে। তাই এসব গাছ অপসারণের জন্য ঝিকরগাছা ইউএনওর কাছে আমরা স্মারকলিপি দিয়েছি।’

শার্শা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুরাদ হোসেন বলেন, ‘গত বছর ঝড়ে নাভারন বাজারের নিউ মার্কেটের সামনের গাছের ডাল ভেঙে কয়েকজন গুরুতর আহত হন। বেশ কয়েকটি যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গাছগুলো অপসারণের দাবিতে আমরা আগেও অনেক আন্দোলন করেছি, মানববন্ধন করেছি। সরকারি কর্মকর্তারা এসে দেখে যান কিন্তু কোনো কাজ হয় না।’

গদখালি ফুল বাজারের তরুণ উদ্যোক্তা আল আমিন বলেন, ‘ঝড়ের সময় মনে হয় এই বুঝি ডাল পড়ল মাথায়। অনেক আতঙ্কে দিন পার করছে সবাই কিন্তু কারও কিছুই করার নেই।’

এ বিষয়ে কথা হয় যশোর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফ উজ জামানের সঙ্গে।

তিনি বলেন, ‘শার্শা ও ঝিকরগাছা ইউএনওর চিঠি আমরা পেয়েছি। এ বিষয়ে হাইকোর্টে রিট আছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেছি। হাইকোর্টে মামলার রায়ের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করছি। রায় পেলেই সিদ্ধান্ত জানানো যাবে।’

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, ১৮৪০ সালে জমিদার কালী পোদ্দারের মা নড়াইল থেকে কলকাতায় গঙ্গাস্নানে যেতেন এই সড়ক দিয়ে। সেখান থেকে ফিরে তিনি ছেলেকে বলেছিলেন রোদের তাপে তার খুব কষ্ট হওয়ার কথা।

এরপরই তিনি বিদেশ থেকে বর্ধনশীল রেইন্ট্রি বৃক্ষের চারা এনে রোপণ করেন যশোর-কলকাতা সড়কে। সেই গাছগুলোই এখনও যশোর-বেনাপোল সড়কে ছায়া দিচ্ছে।

দেশ স্বাধীনের পর ৮০ কিলোমিটার ‘যশোর রোড’-এর ৩৮ কিলোমিটার পড়ে বাংলাদেশ অংশে। বাকি ৪২ কিলোমিটার পড়েছে ভারতের মধ্যে। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বহু শরণার্থী এই মহাসড়ক পেরিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন।

এ বিভাগের আরো খবর