চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণে আহতদের দীর্ঘমেয়াদি চোখের সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ও স্বাধীনতা চিকিৎসা পরিষদের মহাসচিব এম এ আজিজ।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আহতদের দেখে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান তিনি।
এ সময় তিনি বলেন, ‘এত বড় একটি মানবিক বিপর্যয়ের পর প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনায় চিকিৎসক, স্বাস্থ্যসেবীসহ সংশ্লিষ্টরা কাজ করে যাচ্ছেন। কিছু ক্ষেত্রে সমন্বয়হীনতা ও ভুল বোঝাবুঝির ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু একটি মহল বিভিন্নভাবে মিথ্যা ও অসত্য প্রচার করে যাচ্ছে। তারা এটিকে ডিরেক্ট হত্যাকাণ্ড বলে প্রচার করছে।’
কেউ সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আমাদের এমন সমালোচনা করা উচিত নয় যেটি সমাজের ক্ষতি করে। এই মুহূর্তে চট্টগ্রাম মেডিক্যালে ভর্তি হওয়া ৬৩ জন রোগীর সবাই কমবেশি চোখে আক্রান্ত হয়েছেন। চিকিৎসকদের ফলোআপে সব রোগী সুস্থ হয়ে যাবেন।
‘তবে তাদের দৃষ্টিশক্তি কমে আসবে। একজনের কর্নিয়া নষ্ট হয়ে গেছে। তার ওই চোখে আর দৃষ্টি ফিরবে না। তিনি ঢাকায় ভর্তি আছেন। তবে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়া যাবে।’
এ সময় হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম জানান, ‘আইসিইউতে ভর্তি এক রোগীকে অর্থোপেডিক ওয়ার্ নেয়া হয়েছে। পার্ক ভিউ হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তবে জেনারেল হাসপাতালে থাকা রোগীটির অবস্থা স্থিতিশীল।’
নেদারল্যান্ডস ও বাংলাদেশের যৌথ মালিকানাধীন (জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানি) প্রতিষ্ঠান বিএম কনটেইনার ডিপো সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকায়। সেখানে গত শনিবার রাত ৯টার দিকে আগুন লাগে। কনটেইনারে থাকা রাসায়নিক পদার্থের কারণে দফায় দফায় বিস্ফোরণে বাড়ে আগুনের ভয়াবহতা।
৮৭ ঘণ্টা পর বুধবার দুপুরে ডিপোর আগুন নেভে। বিস্ফোরণের ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে সীতাকুণ্ড থানায় মামলা করেছেন উপপরিদর্শক (এসআই) আশরাফ সিদ্দিকী। অবহেলার অভিযোগে ডিপোর আট কর্মকর্তা-কর্মচারীকে এতে আসামি করা হয়েছে। আসামিরা হলেন বিএম কনটেইনার ডিপোর মহাব্যবস্থাপক নাজমুল আক্তার খান, উপমহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) নুরুল আক্তার খান, ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) খালেদুর রহমান, সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্বাস উল্লাহ, জ্যেষ্ঠ নির্বাহী (প্রশাসন) নাছির উদ্দিন, সহকারী ব্যবস্থাপক আবদুল আজিজ, ডিপোর শেডের ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম ও সহকারী ডিপো ইনচার্জ নজরুল ইসলাম।