ঢাকার সাভারে ইউটার্ন নিতে গিয়ে দুই বাস ও ট্রাকের সংঘর্ষে পরমাণু শক্তি কমিশনের আরেক নারী বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
বুধবার গভীর রাতে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) তার মৃত্যু হয়। গত রোববারের এই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৬-এ।
বৃহস্পতিবার সকালে সাভারের পরমাণু শক্তি কমিশনের প্রশাসন বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার এস এম মাজেদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
৩৫ বছর বয়সী ফারহানা নিপা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জিওলজিক্যাল সায়েন্স বিভাগের ৩৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি ধামরাই উপজেলার চৌহাট ইউনিয়নের উত্তর শিবপুর গ্রামে।
একই দুর্ঘটনায় সাভারের পরমাণু শক্তি কমিশনের তিন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও দুই বাসের চালকসহ ৫ জন নিহত হয়েছেন। দুর্ঘটনায় আহত হন অন্তত ১৫ জন।
ঘটনাস্থলেই নিহত দুই বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের ৩৫তম আবর্তনের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আরিফুজ্জামান ও ৪১তম আবর্তনের পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্রী পূজা সরকার। পূজা সরকার সন্তানসম্ভবা ছিলেন।
পরমাণু শক্তি কমিশনের প্রশাসন বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার এস এম মাজেদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, ‘দুর্ঘটনায় আমাদের তিন সহকর্মী ও বাসের চালক নিহত হয়েছেন। এ সময় সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় গুরুতর আহত হওয়া আরেক সহকর্মী ফারহানা নিপাকে।
ওই সময় চিকিৎসক জানিয়েছিলেন, নিপার শরীরের বিভিন্ন অংশের হাড় ভেঙে গেছে। মাথায় প্রচণ্ড আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ায় রক্তক্ষরণ হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজধানীর সিএমএইচ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তিনি বলেন, ‘আজ অফিসে এসে শুনলাম তিনিও মারা গেছেন বুধবার রাতেই। আমাদের চেয়ারম্যান স্যারের কাছে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি।’
নিহত ফারহানা নিপার ছোট ভাই মো. রিফাত নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখনও আমরা ঢাকায় আছি। আমাদের গ্রামের বাড়ি ধামরাইয়ে। আপুর জানাজা সেখানেই হবে। তার একটিই ছেলে। আপুর কোনো ছবিও আমার কাছে নাই। তিনি ধার্মিক ছিলেন, খুব একটা ছবিও তুলতেন না।’
গত ৫ জুন রোববার সাভারে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বলিয়ারপুর এলাকায় দূরপাল্লার সেফলাইন পরিবহনের বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডিভাইডার অতিক্রম করে অপর লেনের একটি বাস ও ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়।
এতে পরমাণু শক্তি কমিশনের তিন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও তাদের স্টাফ বাসের চালক ঘটনাস্তলেই নিহত হন। পরে সেফলাইন বাসের চালকের মৃত্যুর খবরও নিশ্চিত করে সাভার হাইওয়ে থানা পুলিশ।