কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় অংশ নেয়ায় কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহারকে সতর্ক করে নির্বাচন কমিশনের দেয়া নোটিশ কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট।
এ-সংক্রান্ত এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
আদালতের এমপির পক্ষে শুনানি করেন সাঈদ আহমেদ রাজা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।
আগামী ১৫ জুন কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে যে ভোট হতে যাচ্ছে, তাতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী করেছে বাহারের অনুসারী হিসেবে পরিচিত আরফানুল হক রিফাতকে। তার পক্ষে প্রচারণাতেও নেমেছেন বাহার।
আদেশের বিষয়ে সাঈদ আহমেদ রাজা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাহাউদ্দীন বাহারকে সিটি করপোরেশন (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, ২০১৬-এর ২২ ধারায় নির্বাচন কমিশন একটি নোটিশ দেয়, তাতে নির্বাচনের প্রচারণায় অংশ নেয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়।
‘নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্ত এবং ২২ ধারা চ্যালেঞ্জ করে আমরা হাইকোর্টে আবেদন করি। আদালত শুনানি নিয়ে রুল জারি করে। রুলে তাকে দেয়া নির্বাচন কমিশনের নোটিশ কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আদালতে বলেছি, প্রচারণায় অংশ নেয়া থেকে বিরত রাখা বেআইনি। সংসদ সদস্য হলেও আমি এই এলাকার ভোটার। আমার দলের প্রার্থীকে আমি ভোট দিতে পারি। অথচ প্রচারণায় অংশ নিতে পারব না, এটা কী ধরনের আইন। হ্যাঁ, আমি যদি সরকারি চাকরিজীবী হতাম কিংবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য হতাম তাহলে পারতাম না।’
হাইকোর্টের এই রুল জারির ফলে তিনি নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন বলে জানান এই আইনজীবী।
সিটি করপোরেশন (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, ২০১৬-এর ২২ ধারায় বলা হলেছে, ‘সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারী নির্বাচনি প্রচারণা এবং সরকারি সুযোগ-সুবিধা সংক্রান্ত বাধা-নিষেধ।– ১. সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারী নির্বাচন-পূর্ব নির্বাচনি প্রচারণায় বা নির্বাচনি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করিতে পারিবেন না। তবে শর্ত থাকে যে উক্তরূপ ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকার ভোটার হইলে তিনি কেবল তাহার ভোট প্রদানের জন্য ভোট কেন্দ্রে যাইতে পারিবেন। ২. নির্বাচন-পূর্ব সময়ে কোন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তাহার পক্ষে অন্য কোন ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান নির্বাচনি কাজে সরকারি প্রচারযন্ত্র, সরকারি বাহন, অন্য কোন সরকারি সুযোগ-সুবিধাভোগ এবং সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণকে ব্যবহার করিতে পারিবেন না।’
এদিকে নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে বাহাউদ্দীন বাহারকে বুধবার এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
কুমিল্লা সিটির রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহেদুন্নবী চৌধুরী নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে বাহারের আইনজীবীর বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের এ সিদ্ধান্তের বিষয়টিও আদালতে লিখিত আবেদন করা হবে।’