ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তারের পরের দিন জামিনে মুক্তি পান রাঙ্গামাটির সাংবাদিক ফজলে এলাহী। মুক্তি পেয়ে তিনি সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হলে আইনটি বাতিল করতে হবে বলে দাবি করেন। তা না হলে সাংবাদিকতা ঝুঁকিতে পড়বে বলে মনে করেন তিনি।
সাত দিনের অন্তর্বর্তী জামিনে মুক্ত হয়ে বুধবার দুপুরে এসব কথা বলেছেন ফজলে এলাহী।
২০২০ সালে চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে হওয়া মামলায় ফজলে এলাহীকে মঙ্গলবার বিকেলে গ্রেপ্তার করে রাঙ্গামাটি কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
ফজলে এলাহী জাতীয় দৈনিক কালের কণ্ঠ ও বেসরকারি টেলিভিশন এনটিভির রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের স্থানীয় দৈনিক পার্বত্য চট্টগ্রাম ও পাহাড় টোয়েন্টিফোর ডটকমের সম্পাদক।
ফজলে এলাহী বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন যে বাতিল করা উচিত তার আরও একটি গুরুত্ব প্রমাণ হলো আমার এ ঘটনার মধ্য দিয়ে। আমি মনে করি, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হলে, বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হলে অবশ্যই আইনটি বাতিল করতে হবে; না হলে আমাদের পেশা ঝুঁকিতে পড়বে।’
তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার যে ঘটনা হয়েছে, তা এত দ্রুত হয়েছে যে আমি জানিই না আমাকে কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এ রকম বাংলাদেশের যেকোনো প্রান্তের সংবাদকর্মীদের সঙ্গে হয়ে থাকতে পারে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি দাবি জানাব, যাতে আইনগতভাবে এ বিষয়গুলোর সম্মুখীন হতে পারি।’
মামলা প্রসঙ্গে এলাহী বলেন, ‘রাঙ্গামাটির মানুষ জানে, রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক বাংলোর পাশে একটি পার্ক, যেটি ডিসি পার্ক নামে পরিচিত, সে পার্কটি বিনোদনের স্বার্থে জেলা প্রশাসকের কাছে থেকে বরাদ্দ নিয়েছিলেন এক লোক।
বরাদ্দের এক বছর পর জেলা প্রশাসক তা আর নবায়ন করেননি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যখন এক্সটেনশন করেননি তখন এক ভদ্র মহিলা নিজেকে রাঙ্গামাটির সংসদ সদস্যের মেয়ের পরিচয় দিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে যান।
‘তখন জেলা প্রশাসক জানান, আমি তো আপনাকে চিনি না, এটি তো আরেকজনের নামে বরাদ্দ দিয়েছি। যাকে বরাদ্দ দিয়েছি তাকে নিয়ে আসেন। যার নামে বরাদ্দ ছিল, তিনি জেলা প্রশাসককে বন্ড দিয়ে গেছেন যে আর এক্সটেনশন করতে রাজি নন।’
তথ্য-প্রমাণসাপেক্ষে ওই ঘটনা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেন বলে জানান ফজলে এলাহী। সংবাদ প্রকাশের পরই মামলা হয় বলেন তিনি।
মামলার বিষয়ে নিউজবাংলাকে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে থাকা চিনু বলেন, ‘ডিসি বাংলো পার্কে আমার মেয়ে লিজ নিয়ে রেস্টুরেন্ট দেয়। তিন বছরের জন্য লিজ ছিল, বিনিয়োগ করেছিল প্রায় ২৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে ডিসি পরিবর্তন হলে রেস্টুরেন্ট নিয়ে ঝামেলা তৈরি হয়। ডিসি অফিসের লোকজনের সঙ্গে রেস্টুরেন্ট কর্মচারীদের বিবাদ হয়।
‘সে সময় এলাহী নিউজ করে যে এই লিজ পেতে আমি আমার প্রভাব খাটিয়েছি। সে আপত্তিকর কথাবার্তা লিখেছে। আমি তখন কোর্টে মামলা করেছি।’