কর্মদিবসে সড়কে জড়ো হয়ে যান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটার কারণে নগরবাসীর কাছে ‘করজোড়ে’ ক্ষমা চেয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের একজন নেতা। তিনি বলেছেন, তাদের কর্মসূচির কারণে নগরবাসীকে তীব্র যানজটে ভুগতে হয়েছে।
‘৭৫-এর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’ বলে স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতা সম্প্রতি যে স্লোগান দেন, তার প্রতিক্রিয়ায় বুধবার ঢাকা মহানগরে বিক্ষোভ করে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ।
এই কর্মসূচি ঘিরে দুপুরের পর রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে দেখা দেয় তীব্র যানজট। গন্তব্যে পৌঁছাতে নগরবাসীর তীব্র গরমে সড়কে আটকে থাকতে হয়।
বেলা দেড়টার পর থেকে তেজগাঁও সাতরাস্তা মোড় হয়ে হোটেল সোনারগাঁওয়ের সামনে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে জড়ো হতে থাকেন। সোনারগাঁও হোটেলসংলগ্ন প্রান্তে ট্রাকের অস্থায়ী মঞ্চে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয়সহ মহানগর নেতারা।
বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান এবং পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি।
সমাবেশ শেষে তেজগাঁও সাতরাস্তা মোড় হয়ে সোনারগাঁও হোটেলের সামনে থেকে পান্থপথ হয়ে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বিক্ষোভ মিছিল শেষ হয়।
তেজগাঁও এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ সমাবেশ। ছবি: নিউজবাংলা
এই যাত্রাপথে সোনারগাঁও মোড়, পান্থপথ, মিরপুর রোডে যান চলাচল ব্যাহত হয়। মিছিলকে জায়গা করে দিতে দীর্ঘ সময় দাঁড় করিয়ে রাখা হয় গাড়িগুলোকে। আর নগরীর ব্যস্ত এই সড়ক দীর্ঘ সময় বন্ধ রাখার প্রভাব গিয়ে পড়ে আশপাশের সড়কে।
বিক্ষোভ শেষে যানজটে ভোগান্তির কারণে ঢাকাবাসীর কাছে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান। তিনি বলেন, ‘রাজপথে জবাব দেয়ার জন্য একটু নেমেছি। আপনাদের একটু সময় নষ্ট হয়েছে। যানজটে কষ্ট হয়েছে। এ জন্য আমরা করজোড়ে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’
বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম। উপস্থিত ছিলেন দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য শাহাবুদ্দিন ফরাজি, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামসহ মহানগরের নেতারা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিলে কাউকে রেহাই না দেয়ার ঘোষণা এসেছে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি থেকে। বলা হয়, কেউ ইট মারলে পাটকেলটি খেতে হবে। কেউ যদি আঘাত করে তাহলে পাল্টা আঘাতের জন্য নেতাকর্মীরা প্রস্তুত।
নানক আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ হঠাৎ করে কোনো সামরিক জান্তার পকেট থেকে বেরিয়ে আসা দল নয়। কেউ যদি আঘাত করে তাহলে পাল্টা আঘাতের জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই বাংলাদেশকে সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে লাগাতার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। আমাদের সহনশীলতাকে দুর্বলতা ভাবার কোনো কারণ নেই।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম বলেন, ‘আজকের এই বিক্ষোভ সমাবেশে হাজার হাজার লোকের উপস্থিতি প্রমাণ করে আওয়ামী লীগ সকল ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। এটাই আজকের দিনে আমাদের প্রত্যয়।’