যশোর রেলওয়ে স্টেশনে পুলিশের বিরুদ্ধে যাত্রীকে আটকে রেখে হয়রানি, মালামাল লুট ও চাঁদাবাজির অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। রেলওয়ে পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মজনুর রহমান বুধবার দুপুরে নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হবে।
গত ৫ জুন রাতে যশোর রেলওয়ে স্টেশনে হয়রানির শিকার হন সিরাজগঞ্জের সালঙ্গা থানার ধুপিল মেহমানশাহী গ্রামের বাসিন্দা ও ঢাকা তেজগাঁও কলেজের মাস্টার্সের ছাত্র টি এম রাশিদুল হাসান। ঘটনার পরদিন ৬ জুন তিনি জিআরপি পুলিশ হেডকোয়ার্টারে অভিযোগ করেন।এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার দুপুরে যশোর রেলওয়ে স্টেশনে যান পুলিশ কর্মকর্তা মজনুর রহমান। সিরাজগঞ্জ থেকে যশোরে আসেন অভিযোগকারী রাশিদুল হাসান।পুলিশ কর্মকর্তা মজনুর রহমান ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন। এ সময় তিনি অভিযোগকারী, স্টেশন মাস্টার আয়নাল হাসান, রেলওয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী, জিআরপি ফাঁড়ি ইনচার্জ এসআই শহিদুল ইসলাম, ফাঁড়ির কনস্টেবল এবং স্টেশনের বিভিন্ন দোকানিদের সঙ্গে কথা বলেন। একই সঙ্গে অভিযুক্ত কনস্টেবলদেরও জবানবন্দি নেন।
যা ঘটেছিলটি এম রাশিদুল হাসান জানান, গত ৫ জুন তিনি ভারত থেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে দেশে আসেন। এরপর বাসে করে রাত ৮টার দিকে যশোর স্টেশনে আসেন সুন্দরবন এক্সপ্রেসে করে বাড়ি (সিরাজগঞ্জ) যাওয়ার জন্য। স্টেশনে অবস্থানকালে রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি) কনস্টেবল আবু বক্কার, আতিকুর রহমানসহ সাদা পোশাকধারী আরও তিনজন তার ব্যাগ তল্লাশির নামে ফাঁড়িতে নিয়ে যান। সেখানে ৫ ঘণ্টা আটকে রেখে ভারত থেকে আনা পোশাক, প্রাসধনীসহ প্রায় ১৫ হাজার টাকার মালামাল নিয়ে নেন। পরে ভয়ভীতি দেখিয়ে বিকাশের মাধ্যমে ৫ হাজার টাকা নিয়ে সাদা কাগজে সই রেখে ছেড়ে দেন। রাত দেড়টার দিকে তাকে ছেড়ে দেয়ার পর বাধ্য হয়ে প্রাইভেট কার ভাড়া করে রাশিদুল বাড়িতে ফেরেন।রাশিদুল জানান, রেলওয়ে পুলিশের এই মালামাল লুট, চাঁদাবাজির বিষয়টি তিনি ৯৯৯-এ ফোন করে এবং পরে রেলওয়ে পুলিশের হেডকোয়ার্টারে লিখিত জানান।রাশিদুল আরও জানান, ওই রাতে তিনি যে বিকাশ নাম্বারে টাকা দিয়েছেন তার স্কিনশট, গোপনে পুলিশ কনস্টেবলদের তোলা ছবি ও ভিডিও অভিযোগের সঙ্গে সংযুক্ত করেছেন। পাশাপাশি ঘটনার সময় স্টেশনের সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করলেও তার অভিযোগের সত্যতা মিলবে বলে দাবি করেন। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল আবু বক্কার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ওই রাতে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। তারা কোনো যাত্রীকে তল্লাশি করেননি।