বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘বাড়ি গেলে মনে থাকে না আমার মেয়ে কবরে’

  •    
  • ৮ জুন, ২০২২ ১৮:০০

নাজমুল বলেন, ‘বাড়ি গেলে মনে থাকে না যে আমার মেয়ে কবরে। ঘরে উঁকি মারি, কখন মেয়ে দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরবে। মনে হয়, আমি এখন ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখছি। ঘুম ভাঙলে সব ঠিক হয়ে যাবে।’

‘আমার একমাত্র মেয়ে ছিল নির্জলা খাতুন। বড়ই আদরের। সামান্য মোবাইল মেকানিক হয়ে স্বপ্ন ছিল মেয়েকে উচ্চশিক্ষিত করব। সেই স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে ওই বাচ্চু। আমার মেয়েকে ভুল চিকিৎসা দিয়ে মেরে ফেলেছে।’

এ কথা বলেন মাগুরার শালিখা উপজেলার আড়পাড়া বাজার এলাকার নাজমুল হোসেন। তার মেয়ে নির্জলার মৃত্যুর ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে বুধবার বেলা ১১টার দিকে আড়পাড়া বাজার এলাকায় মানববন্ধন হয়।

প্রশাসনের সিলগালা করা আল হেরা হাসপাতালে অপারেশনের সময় গত রোববার মৃত্যু হয় কুমারকুঠা দাখিল মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী নির্জলার। মেয়ের মৃত্যুর ঘটনায় ক্লিনিকের মালিক বাচ্চু মিয়ার ফাঁসি দাবি করেন নাজমুল।

তিনি বলেন, ‘বাড়ি গেলে মনে থাকে না যে আমার মেয়ে কবরে। ঘরে উঁকি মারি, কখন মেয়ে দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরবে। মনে হয়, আমি এখন ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখছি। ঘুম ভাঙলে সব ঠিক হয়ে যাবে।’

সরকারি নিবন্ধন না থাকায় ২৯ মে হাসপাতালটির কার্যক্রম বন্ধ করে সিলগালা করেছিল স্বাস্থ্য বিভাগ।

শনিবার পেটের ব্যথা নিয়ে এই হাসপাতালেই ভর্তি করা হয় নির্জলাকে। রোববার সকালে তার অস্ত্রোপচার করা হয়। অস্ত্রোপচারের পর জ্ঞান না ফেরায় যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় সোমবার বিকেলে আল-হেরা হাসপাতালের মালিক বাচ্চু মিয়া, তার স্ত্রী সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স কারিমুন্নেসা ও সনিয়া শারমিন নামে এক চিকিৎসককে আসামি করে নাজমুল মামলা করেন।

সঠিক বিচার পাওয়া নিয়ে সংশয়ে থাকা নাজমুল জানান, ঘটনার পর ক্লিনিকের মালিক বাচ্চুর স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হলেও তিনি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। বাচ্চু প্রভাবশালী মানুষ। তিনি সব ম্যানেজ করে আইনের হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারবেন। এ ছাড়া পুলিশ ওই চিকিৎসকের নির্দিষ্ট কোনো কর্মস্থল খুঁজে না পাওয়ার কথা জানিয়েছে।

মানববন্ধনে যোগ দেন শালিখা উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা হানিফ মুন্সী।

তিনি বলেন, ‘কোনো অবৈধ স্বাস্থ্যসেবা আমার উপজেলায় থাকবে না। আমি জনগণকে সচেতন করতে প্রচার শুরু করব। সেই সঙ্গে প্রশাসনের সহযোগিতা চাইব যেন এভাবে অপচিকিৎসায় কাউকে মরতে না হয়।’

জেলা সিভিল সার্জন জানান, ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি কাজ করছে।

তিনি বলেন, ‘যে চিকিৎসকের নামে অভিযোগ উঠেছে তার বিষয়ে চিকিৎসকদের সংগঠন বিএমডিসিকে জানানো হয়েছে। খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরেও আমি মৌখিকভাবে বিষয়টি জানিয়েছি। স্বাস্থ্য বিভাগ যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে কাজ করছে।’

শালিখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিশারুল ইসলাম জানান, মামলার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের অভিযান চলছে। শিগগিরই তাদের আটক করা হবে।

এ বিভাগের আরো খবর