৭৫ এর হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার বলে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা যে স্লোগান দিয়েছেন, তা নিয়ে ওই বছরের ১৫ আগস্টের ঘটনাপ্রবাহ বোঝানো হয়নি বলে দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, সেই বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকির য়ে অভিযোগ তোলা হচ্ছে সেটি সঠিক নয়। ওই বছরের ৭ নভেম্বরের ঘটনাপ্রবাহ বোঝানো হয় ওই বক্তব্যে যে ঘটনার মধ্য দিয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার কাছাকাছি এসেছিলেন।
বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভে বক্তব্য রাখছিলেন গয়েশ্বর। গ্যাসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং খালেদা জিয়াকে হত্যার হুমকির অভিযোগ এনে এই কর্মসূচির আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুতে নিয়ে গিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে টুস করে ফেলে দেয়ার কথা বলেন। একে হত্যার হুমকি হিসেবে দেখে নানা কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি।
একই দিন রাজধানীতে আওয়ামী লীগের ডাকে বিভিন্ন এলাকায় চলছিল আরেকটি বিক্ষোভ। প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকির অভিযোগ এনে সেই কর্মসূচি পালন করছে ক্ষমতাসীন দল। স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতার বক্তব্যকে ঘিরে এই বিক্ষোভ করছে তারা।
গয়েশ্বর রায় বলেন, ‘স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক কয়েকদিন আগে এক সভায় বলেছিলেন- ৭ নভেম্বরের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার। সেটাকে সরকারের লোকেরা বলতে চায়, তাদের স্বঘোষিত প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে।’
তিনি ‘জাতীয়তাবাদী দল খুনিদের দল না। এই সংগঠন খুন-খারাবিতে বিশ্বাস করে না।
‘ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আপনারা বলছেন, আপনাদের নেত্রী কে হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমরা মারার হুমকি দিব কেন? এ অভ্যাস আমাদের নেই, আপনাদের আছে।’
প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগ এনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ‘আমরা কি বসে তামাক খাব?’ বলে যে মন্তব্য করেন, তারও জবাব দেন গয়েশ্বর।তিনি বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেব আবার দুঃখ করে বলছেন, আমরা কি আঙ্গুল চুষব নাকি? আমরা গণতন্ত্রের কথা বলছি। আমরা গণতন্ত্র চাই।’
নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে বিএনপি নেতা বলেন, ‘আজকে জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে জনগণের বারোটা বাজিয়েছে। আপনাদের (সরকারের) বারোটা তো অনেক আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে। গ্যাসের দাম বাড়ল, বিদ্যুতের দাম বাড়ল, নিত্য প্রয়োজনীয় সকল জিনিসের দাম বাড়ল।’
আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটে কখনও ক্ষমতায় আসেনি বলেও দাবি করেন গয়েশ্বর। বলেন, ‘অতীতেও আপনারা নির্বাচিত হতে পারেননি, ভবিষ্যতেও পারবেন না। অতীতের মতো ফ্যাসিবাদী পুলিশ দিয়ে রাতের বেলা ভোট ছিনতাই করে আর অতীতের মতো ক্ষমতায় থাকার সুযোগ আপনাদের নেই।’
বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান বলেন, ‘এই সরকার ক্ষমতা টিকে থাকতে সারা দেশে বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর হামলা করছে। গতকাল চট্রগ্রামে জুনায়েদ সাকির উপর হামলা করেছে ছাত্রলীগের গুণ্ডা বাহিনী। এভাবে দমন পীড়ন করে ক্ষমতায় থাকা যাবে না।’
নেতাকর্মীদের আন্দোলনের প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘গণআন্দোলনের মাধ্যমে এই স্বৈরাচারি সরকারের পতন হবে এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে।’
সমাবেশ সভাপতিত্ব করেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান। আরও বক্তব্য দেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভূঁইয়া, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোনায়েম, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম।