রিকুইজিশন করা গাড়ি জনস্বার্থে ব্যবহার করতে হবে। সেই সঙ্গে কোনো গাড়ি সাত দিনের বেশি রিকুইজিশন করা যাবে না বলে রায় দিয়েছে হাইকোর্ট।
বুধবার বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দিয়েছে।
এর আগে বিষয়টি নিয়ে ২০১৯ সালের ৩১ জুলাই রায় দিয়েছিল হাইকোর্ট। ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি আজ প্রকাশ হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। আর ঢাকা মেট্রো পলিটন পুলিশের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোশতাক হোসেন।
পরে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ’এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে কয়েক দফা গাইডলাইন অনুসরণ করতে বলেছেন।
’গাইডলাইন দিয়ে বলা হয়েছে, ডিএমপি আইনে রিকুইজিশন করার ক্ষমতা ডিএমপি কমিশনারের। গাড়ি শুধুমাত্র জনস্বার্থে ব্যবহার হবে, ব্যক্তিগত কাজে বা অন্য উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যাবে না।’
ব্যক্তিগত, কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের গাড়ি রিকুইজিশন করার ক্ষেত্রে মালিককে কারণ উল্লেখ করে আগে নোটিশ দিতে হবে বলে জানান তিনি।
পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়, যে কাজের উদ্দেশ্যে গাড়ি রিকুইজিশন করা হবে, তার বাইরে কোনো পুলিশ অফিসার বা তাদের পরিবার ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারবেন না।
কোনো গাড়ি সাত দিনের বেশি সময়ের জন্য রিকুইজিশন করা যাবে না। রিকুইজিশনে থাকার সময় গাড়ির তেল ও আনুষঙ্গিক খরচ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বহন করবে।
ডিএমপির মাধ্যমে একটি কমিটি গঠন করে রিকুইজিশন করা গাড়ির ক্ষতিপূরণ এবং ডেইলি অ্যালাউন্স নির্ধারণ করতে হবে। কখনও ক্ষতি হলে সেটার যথাযথ ক্ষতিপূরণ ১৫ দিনের মধ্যে দিতে হবে। এ জন্য কর্তৃপক্ষ ডিএমপিকে ফান্ড দেবে।
এ ছাড়া রায়ে বলা হয়েছে, রিকুইজিশনের বিষয়ে কোনো অভিযোগ এলে তার তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে।
রোগী বহনকারী, পঙ্গু বা এয়ারপোর্টে যাচ্ছেন এমন বিদেশগামী যাত্রী বহনকারী গাড়ি রিকুইজিশন করা যাবে না।
রিকুইজিশন করা গাড়ির রেজিস্ট্রার মেইন্টেইন করতে হবে। যেখানে বিস্তারিত তথ্য থাকবে।
রায় পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে এই গাইডলাইন সার্কুলার আকারে সংশ্লিষ্ট স্টেশেনের অফিসারকে পাঠাতে ডিএমপি কমিশনারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অধ্যাদেশের ১০৩ (ক) ধারার অধীনে, পুলিশ গাড়ি রিকুইজিশনের বিধান নিয়ে ২০১০ সালে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে জনস্বার্থে এ রিট আবেদন করে।
ওই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে সে বছরের ২৩ মে রুল জারি করে আদালত। পরে ২০১৯ সালের ৩১ জুলাই রায় দেয় হাইকোর্ট।