মহানবী হযরত মোহাম্মদকে (স.) নিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতার অবমাননাকর বক্তব্যের প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারসংলগ্ন সড়ক থেকে বুধবার দুপুর ১টার দিকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘুরে মিছিলটি শেষ হয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে গিয়ে। এতে অংশগ্রহণ করেন দুই শতাধিক শিক্ষার্থী।
মানববন্ধনে মহানবীকে নিয়ে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির দুই নেতার অবমাননাকর মন্তব্যের প্রতিবাদে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিন্দা জানানোর দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
বাংলা বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মশিউর রহমান বলেন, ‘ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের নেতা নূপুর শর্মা ও নবীন কুমার জিন্দাল মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে কটূক্তি করেছে। তাদের এমন কর্মকাণ্ডে সারা বিশ্বের মুসলিম সমাজ তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে। আমরা ধর্মীয় শান্তি বিনষ্টের দায়ে ভারতের কুলাঙ্গার নেতাদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।’
‘ধর্মীয় অপবাদ ছড়িয়ে বিজেপি একটি বিশেষ উদ্দেশ্য হাসিল করতে চায়। তাদের এমন কর্মকাণ্ড গোটা ভারতীয় উপমহাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের স্পষ্ট পাঁয়তারা।’
এ ছাড়া তারা সম্প্রীতির বাংলাদেশে হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীকে উসকে দিয়ে হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে বিদ্যমান পারস্পরিক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে চায় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইয়াহিয়া জিসানের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইজাজ আহমেদ, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তরিকুল ইসলাম ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ রাকিব।
জ্ঞানবাপী মসজিদ নিয়ে একটি টেলিভিশন চ্যানেলের অনুষ্ঠানে মুম্বাইয়ের বাসিন্দা, বিজেপি মুখপাত্র নূপুর ইসলামের নবী হজরত মুহাম্মদকে (সা.) নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছিলেন। শুধু নূপুর শর্মাই নন, ইসলামের নবীকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন বিজেপির আরেক মুখপাত্র নবীন কুমার জিন্দাল।
এ ইস্যুতে পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করতে থাকায় বিজেপির পক্ষ থেকে রোববার নূপুর ও নবীনকে ৬ বছরের জন্য বরখাস্ত করা হয়।
এ নিয়ে মুসলিম বিশ্বে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ইরান, কুয়েত ও কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে তাদের দেশে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতদের তলব করে জবাব চেয়েছে।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতীয় রাষ্ট্রদূত ড. দীপক মিত্তালকে ডেকে এ ঘটনার আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়েছে। একই সঙ্গে দেশটির সরকার এ ঘটনায় বিজেপি মুখপাত্র নূপুর শর্মা ও নবীন জিন্দালের বরখাস্তকে স্বাগত জানিয়েছে।