বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করে পেটে গজ রেখে সেলাইয়ের ঘটনায় ভুক্তভোগী শারমিন আক্তার শিলাকে উন্নত চিকিৎসার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
এ ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়ে আদালত ভুক্তভোগীকে ক্ষতিপূরণ দিতে রুল জারি করেছে।
বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার এসব আদেশ দেয়।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন জীবন নেছা মুক্তা ও জাকিয়া আনারকলি। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান দাউদ।
আইনজীবী জীবন নেছা মুক্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আদালত আমাদের আবেদনের শুনানি নিয়ে উন্নত চিকিৎসার নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে এ ঘটনায় দোষী ব্যক্তি শনাক্তে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।’
কী ঘটেছিল
ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার জিয়াউল হাসানের স্ত্রী শারমিন আক্তার অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে গত ১৬ এপ্রিল বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। অস্ত্রোপচারের পর থেকে পেটে ব্যথা অনুভব করছিলেন তিনি। এ জন্য সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাও দেয়া হয় তাকে।
বাড়ি ফেরার কিছুদিন পর আবারও তার পেটে প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হয়। অস্ত্রোপচারের জায়গা থেকে পুঁজও বের হতে থাকে। এরপর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর দেখা যায়, শারমিনের পেটের ভেতর গজ রয়ে গেছে। পরে ২২ মে আবার অস্ত্রোপচার করে তা বের করেন হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান নাজিমুল হক।
নিউজবাংলাকে এ চিকিৎসক বলেন, ‘দীর্ঘদিন গজ থাকায় পেটের ভেতরে পচন ধরে নাড়ি ফুটো হয়ে গেছে শারমিনের। অস্ত্রোপচার করে সেগুলো ঠিক করে দেয়া হয়েছে।’
চিকিৎসকের ভুলে স্ত্রীর এমন ভোগান্তি হয়েছে দাবি করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন জিয়াউল। তিনি বলেন, ‘চিকিৎসকের কাছে আমরা আসি সুস্থ হওয়ার জন্য। সেই চিকিৎসকই আমার স্ত্রীকে অসুস্থ করে দিয়েছে।’
কোন চিকিৎসক তার স্ত্রীর অস্ত্রোপচার করেছিলেন, তা জানাতে পারেননি তিনি।
হাসপাতালের পরিচালক এইচ এম সাইফুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঘটনাটি আমরা অবগত। যেটা ঘটেছে, সেটা দুঃখজনক। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’