চট্টগ্রামে সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যার ঘটনায় শিশু আইন মেনে তাদের দুই সন্তানের বক্তব্য নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি শাহেদ নুরউদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ নির্দেশ দেয়।
আদালত আদেশে বলেছে, শিশু আইনের বিধান অনুযায়ী বক্তব্য নেয়ার সময় মাগুরা জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, একজন নারী পুলিশ সদস্য এবং শিশু দুটির দাদা উপস্থিত থাকবেন। শিশু দুটির জবানবন্দি নেয়ার পর্যাপ্ত সময়ের আগে তাদের উপস্থিত করতে হবে।
মিতু হত্যা মামলায় শিশু আইন মেনে তার দুই সন্তানের বক্তব্য নেয়ার নির্দেশনা চেয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষ হয় মঙ্গলবার। এ বিষয়ে আদেশের জন্য বুধবার দিন ঠিক করে দেয় হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার শুনানির সময় আদালত একপর্যায়ে বলে, ‘একটি গোষ্ঠী মিতু হত্যা মামলার বিচারকে বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে। তার পরিবারের কি বিচার পাওয়ার অধিকার নাই?’
আদালতে বাবুল আক্তারের দুই শিশুর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারোয়ার হোসেন বাপ্পী।
এর আগে গত ১৬ মার্চ শিশু আইন মেনে সতর্কতার সঙ্গে শিশুদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নির্দেশ দেয় চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালত।
আদালতের এ আদেশের পর পিবিআই শিশু দুটিকে তাদের অফিসে হাজির করতে নোটিশ দেয়, যেটা তারা শিশু আইন অনুযায়ী করতে পারেন না। এ কারণে শিশু আইন অনুসারে যাতে শিশু দুটিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, তার নির্দেশনা চেয়ে গত ৩০ মার্চ হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত মঙ্গলবার আদেশের দিন ঠিক করে।
২০১৬ সালের ৫ জুন ভোরে ছেলেকে স্কুলে পৌঁছে দিতে বের হওয়ার পর চট্টগ্রাম নগরের জিইসি মোড়ে কোপে ও গুলিতে নিহত হন মিতু।ঘটনার পর তৎকালীন এসপি বাবুল আকতার পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। মামলায় অভিযোগ করেন, তার জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমের জন্য স্ত্রীকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে।
বাবুলের শ্বশুর সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন ও শাশুড়ি সাহেদা মোশাররফ এই হত্যার জন্য বাবুলকে দায়ী করে আসছিলেন।
শুরু থেকে চট্টগ্রাম পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) মামলাটির তদন্ত করে। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আদালত মামলার তদন্তভার পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) দেয়। তদন্ত শেষে পিবিআই গত বছরের ১২ মে এ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।
হত্যায় ‘বাবুল জড়িত’ বলে সন্দেহ হলে একই দিন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন আরেকটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় বাবুলসহ আটজনকে আসামি করা হয়। পুলিশ এ মামলায় বাবুলকে গ্রেপ্তার দেখায়।