কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দিন যত এগিয়ে আসছে তত জমজমাট হচ্ছে প্রচার। নানা রকম হিসাব কষছেন প্রার্থী ও সমর্থকরা।
১৫ জুন কুমিল্লা সিটির ২৭ ওয়ার্ডের ১০৫টি ভোটকেন্দ্রে ভোট নেয়া হবে। এর মধ্যে ৮৯টি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে জেলা পুলিশ।
গত বছর কুমিল্লা নগরীর ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর সৈয়দ সোহেল ও তার এক সঙ্গীকে প্রকাশ্যে গুলিতে হত্যা করা হয়। এ ছাড়া গত কয়েক বছরে ২৪, ২৫ ও ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে আধিপত্য বিস্তারের জেরে কয়েকটি খুনের ঘটনা ঘটে।
এসব কারণে সদরের ১৬, ১৭, ২৪, ২৫ ও ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের সব কটি কেন্দ্রকে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করা হচ্ছে।
এ ছাড়া সদর দক্ষিণের ৯টি ওয়ার্ডের ৩২টি ভোটকেন্দ্রের সবই আছে ঝুঁকির তালিকায়।
ঝুঁকি বিবেচনায় যাই হোক, সব কেন্দ্রকেই সমান গুরুত্ব দিয়ে নিরাপত্তা দেয়ার কথা জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম তানভীর আহমেদ।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ কিংবা কম ঝুঁকিপূর্ণ নয়, আমরা সব কেন্দ্রকেই সমানভাবে গুরুত্ব দিয়ে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করব। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে নির্দিষ্টসংখ্যক পুলিশ, এপিবিএন, আরআরএফ ও আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবে।
‘ভোটের দিন নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকবে ভোটকেন্দ্রগুলোসহ পুরো কুমিল্লা নগরী।’
রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহেদুন্নবী চৌধুরী বলেন, ‘আমরা সব কেন্দ্রকেই সমান গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছি। কোনো কেন্দ্রকেই কম গুরুত্ব দেয়া হবে না। নির্বাচন সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণ করতে নির্বাচন কমিশন সচেষ্ট আছে। আমরা চেষ্টা করছি, একটি নির্বিঘ্ন নির্বাচন উপহার দিতে।’
পুলিশ জানায়, ভোটের দিন পুলিশের মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স, বিজিবির টহল টিম, রিজার্ভ ফোর্স ও ভ্রাম্যমাণ আদালত সব সময় মাঠে থাকবে। সব মিলিয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ছয় হাজারের বেশি সদস্য কাজ করবে।
কোনো কারণে পরিস্থিতির অবনতি হলে বুলেটপ্রুফ আর্মড পারসোনেল ক্যারিয়ার (এপিসি) ও জলকামান নামানো হবে।
১৫ জুন নগরীর প্রবেশপথে বসানো হবে পুলিশের ৭৫টি চেকপোস্ট ও ১০টি পিকেট টিম। প্রচারের সময় নগরে বসানো হয়েছে ১৫টি চেকপোস্ট ও কাজ করছে পুলিশের ২১টি টহল টিম।
জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কুমিল্লা সিটি নির্বাচনের ভোটের দিন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রতিটি কেন্দ্রে কঠোর নিরাপত্তা থাকবে। ২৭টি ওয়ার্ডে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট ও মোট ১২ প্লাটুন বিজিবি দায়িত্ব পালন করবে।
‘এ ছাড়া পর্যাপ্তসংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হবে। ভোটাররা যেন নির্বিঘ্নে ভোট দিতে যেতে পারেন আমরা তার সব ব্যবস্থাই করব।’
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদপ্রার্থী আছেন পাঁচজন। তারা হলেন আওয়ামী লীগের আরফানুল হক রিফাত, বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু, মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন কায়সার, কামরুল আহসান বাবুল এবং ইসলামী আন্দোলনের রাশেদুল ইসলাম।
এ ছাড়া সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১০৮ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৩৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।