বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পেটে গজ রেখে সেলাইয়ের ঘটনায় রিট শুনবে হাইকোর্ট।
আদালতে বলেছে, প্রত্যেক পরিবারে একজন ডাক্তার থাকা উচিত। কারণ সাধারণ মানুষ হাসপাতালে গেলে ডাক্তার সাহেবরা বেশি সময় ধরে কথা বলতে চান না। একটু বেশি সময় নিয়ে রোগী কথা বলতে চাইলে তারা বিরক্তবোধ করেন। এজন্য প্রত্যেক পরিবারে একজন করে ডাক্তার থাকলে দরকার বলেও উল্লেখ করেন বিচারক।
আদালত আরও বলেন, পেটে গজ রেখে সেলাই করে ওই মেয়ের জীবন ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
পরে রিট করা আইনজীবীকে আবেদনটি সংশোধন করে আগামীকাল নিয়ে আসতে বলেন।
বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এসব কথা বলেন।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জীবন নেছা মুক্তা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান দাউদ।
বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অপারেশনের পর পেটে গজ রেখে সেলাইয়ের ঘটনায় ভুক্তভোগী শারমিন আক্তার শিলাকে ১৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন এ আইনজীবী।
রিটে উন্নত চিকিৎসার জন্য রোগীকে ঢাকার বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ও তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা চান তিনি। এ ছাড়া ভুক্তভোগীর পরিবারের খরচ নির্বাহের জন্য তাৎক্ষণিক ১০ লাখ টাকা দিতে বলা হয়েছে।
স্বাস্থ্য সচিব, বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার, বরিশাল মেডিক্যালের পরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়েছে।
যা ঘটেছিল
১৬ এপ্রিল রাতে সিজারের মাধ্যমে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন ঝালকাঠীর নলছিটি উপজেলার বাসিন্দা জিয়াউল হাসানের স্ত্রী শারমিন আক্তার শিলা। অস্ত্রোপচারের পর থেকে পেটে ব্যাথা অনুভব করছিলেন তিনি। এ জন্য সার্জারি বিভাগে চিকিৎসা দেয়া হয় তাকে।
সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার কিছু দিন পর শুরু হয় প্রচণ্ড পেটে ব্যাথা। ফুলে যায় পেট। ২১ মে পেট ফুটো হয়ে পুজ বের হয়। তাৎক্ষণিক ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। সেখানে ২২ মে পুনরায় অপারেশন করা হয়।
শারমিনের পিতা আব্দুর রব সিকদার বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালে মেয়ে এনে ভর্তি করিয়েছি সুচিকিৎসা পাওয়ার জন্য। সেখানে ভুল চিকিৎসায় আমার মেয়ে মরতে বসেছে। এভাবে হলে মানুষ যাবে কোথায়? আমি বিচার চাই এই অপচিকিৎসা দেয়া ডাক্তারের।’