নারায়ণগঞ্জে তরুণীকে ধর্ষণের ভিডিও ছড়িয়ে দেয়া ও তরুণীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার ইউপি সদস্য আব্দুল মোমেন কচিকে দুই দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।
নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শামসুর রহমানের আদালত মঙ্গলবার দুপুরে তাকে রিমান্ডে পাঠায়। এর আগে সোমবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আদালত পরির্দশক আসাদুজ্জামান নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা জানান, সোমবার দুপুরে তরুণীর ঘর থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
এ ঘটনায় সোমবার সন্ধ্যায় তরুণীকে ‘আত্মহত্যার’ প্ররোচনা এবং ধর্ষণের ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ওই তরুণীর মা। রাতে এ মামলায় স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল মোমেন কচিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মামলার আরেক আসামি মো. তবিরকে মঙ্গলবার দুপুরে বন্দর উপেজলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ওই তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলার আসামি নুরুল আমিনকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান ওসি।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ২ বছর ধরে বন্দর উপজেলার বালিয়াগাও এলাকার নুরুল আমিন একই এলাকার ওই তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। নুরুল বিভিন্ন সময়ে বিয়ের কথা বলে মেয়েটিকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। গত ২২ মে সকালেও তাকে ধর্ষণ করেন তিনি।
এরপর ওই মেয়েটি নুরুলকে বিয়ের কথা বললে নুরুল অনীহা প্রকাশ করেন। এ ঘটনা জানালে তরুণীর মা গত ২ জুন নুরুলকে আসামি করে বন্দর থানায় মামলা করেন।
বাদী বলেন, ‘মামলা করার পর থেকেই আসামিপক্ষের লোকজন হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। তারা জোর করে রোববার রাতে সালিশ বসায়। সালিশে উপস্থিত সবার সামনে ধর্ষণের ভিডিও দেখানো হয় এবং ফেসবুকে ভাইরালের হুমকি দেয়। এই অপমান সইতে না পেরে আমার মেয়েটা আত্মহত্যা করল। আমি এর বিচার চাই।’
নাম না প্রকাশের শর্তে স্থানীয়রা জানান, রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বালিয়াগাওয়ে সালিশ ডাকা হয়। সালিশে কলাগাছিয়া ইউপির এক নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুল মোমেন কচিসহ আসামি পক্ষের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
সালিশে ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্ত নুরুলের স্ত্রী শ্যামলী বেগম ও তার ভাগিনা স্থানীয় মসজিদের ইমাম মো. ইব্রাহিম ধর্ষণের ভিডিও মোবাইলের মাধ্যমে সালিশে উপস্থিত লোকজনকে দেখায়। একই সঙ্গে তারা ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে দেয়ার হুমকিও দেয়। তখন ওই তরুণী তার মাকে নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে চলে যান।
মদনগঞ্জ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক মো. মহসিন বলেন, ‘বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।’